শীতকালে করোনাভাইরাস পুনরায় দেখা দিতে পারে, সকলেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীতের আগমনে দেশে আবারো করোনাভাইরাস যাতে মাথাচারা দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার এবং মাস্ক ব্যবহারের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শীতের আগমনে দেশে আবারো করোনাভাইরাস যাতে মাথাচারা দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার এবং মাস্ক ব্যবহারের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে যখনই আবার শিতকাল আসছে পৃথিবীর সবদেশেই কিন্তু আবার করোনাভাইরাস দেখা দিচ্ছে। ইউএসএ, ইংল্যান্ড বা ইউরোপের দেশগুলোতে এর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাজেই বাংলাদেশের সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য আমি অনুরোধ করছি।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘শীতকাল আসলেই একটু ঠান্ডা লাগে, সর্দি, কাশি হয়। আর এটা হলেই এই করোনাভাইরাসটা আমাদের সাইনাসে গিয়ে বাসা বানাতে পারে। কাজেই, সেইদিকে সবাইকে একটু সতর্ক থাকতে হবে। সবাইকে মাস্ক পড়তে হবে এবং খাদ্য তালিকায় ‘ভিটামিন সি’ যাতে একটু বেশি থাকে এবং যাতে ঠান্ডা না লাগে সেদিকে নজর দিতে হবে।’ তিনি এ সময় মৌসুমি ফলমূল, শাকসবজী এবং তরিতরকারি বেশি করে খাবার পরামর্শ দেন।
প্রধানমন্ত্রী আজ এক অনুষ্ঠানে শীত মৌসুমের আগে তাঁর ত্রাণ গুদামের জন্য বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংক (বিএবি)-র দুঃস্থদের জন্য ২৬ লাখ ৪৫ হাজার কম্বল গ্রহণ কালে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাঁর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ৩৭টি বেসরকারি ব্যাংকের কাছ থেকে এই কম্বল গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
মুখ্য সচিব প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলের জন্য ১০ লাখ টাকার চেকও গ্রহণ করেন।
বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বিভিন্ন ব্যাংক চেয়ারম্যানদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, টিকা দেয়ার পরে কারো করোনা হলে তার হয়তো ক্ষতির পরিমানটা বেশি হবে না, তবে, তার থেকে ছড়াতে পারে, তাই মাস্কটা ব্যবহার করতেই হবে।
তিনি এ ব্যাপারে প্রচার-প্রচারণার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সবাইকে সতর্ক করার বিষয়ে প্রচার-প্রচারণাটা দরকার। একটু সতর্ক হলে এই করোনাভাইরাস আর বাংলাদেশের মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
তিনি এ সময় ব্যাংক কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সমগ্র দেশের জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, করোনাভাইরাসকে আমরা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। টিকা সংগ্রহ করে সারাদেশে টিকদান অব্যাহত রয়েছে এবং আজকেও সারাদেশে ৮০ লাখ টিকাদানের কার্যক্রম চলছে। ছাত্র সমাজ এবং স্কুলের শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার প্রস্তুতি তাঁর সরকারের রয়েছে। কেউ বাদ যাবে না, নীতিমালা অনুযায়ী যারা টিকা পাবার যোগ্য বাংলাদেশের সেই সব মানুষই টিকা পাবে এবং আগামী বছরের মাঝামাঝি সময় নাগাদ আমরা সকল মানুষকেই টিকা দিতে সক্ষম হব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাকালে বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে আসলেও তাঁর সরকার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশে কোনকিছু যাতে স্থবির না হয় এবং সচল থাকে। সেদিক থেকে আমি মনে করি বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে, বলেন তিনি।
মানুষের দুঃসময়ে সবসময় বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ব্যাংক সব সময় এগিয়ে আসেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাঁদেরকে এবারেও শীতার্ত জনগণের সহায়তায় এগিয়ে আসায় ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোটাই বড় কথা।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদেরকে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন কাজেই এই দেশ উন্নত সমৃদ্ধ হোক, দারিদ্র মুক্ত হোক এবং তৃণমূলের মানুষটির পর্যন্ত যাতে ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
তিনি বলেন, যত বেশি মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে তত বেশি ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। নতুন বাজার সৃষ্টি হবে এবং আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াবো এবং বিশ^ দরবারে আমাদের একটা অবস্থান আমরা করে নেব। কারণ, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি কাজেই সবসময় মাথা উঁচু করেই আমরা চলবো।
সরকার প্রধান বলেন, তাঁর সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পরেই বিভিন্ন ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দেন, যাতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতও আরো শক্তিশালী হয় এবং তারা দেশের মানুষের সেবা করতে পারে এবং দেশের মানুষের আরো কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।
তাঁর এই পদক্ষেপ দেশের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে যথেষ্ট ভূমিকা রেখে যাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সুত্র-বাসস।