বগুড়ায় শহীদ মিনারে বিএনপির এমপিকে ধাওয়া দিলো ছাত্রলীগ!
বগুড়ায় জেলা বিএনপির আহবায়ক সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজকে রোববার সকালে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বাইরে ধাওয়া করেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ধাওয়া খেয়ে সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নিকটস্থ সদর পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেন।
বগুড়ায় জেলা বিএনপির আহবায়ক সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজকে রোববার সকালে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বাইরে ধাওয়া করেছে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ধাওয়া খেয়ে সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নিকটস্থ সদর পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেন। এ সময় বিএনপির সহযোগী সংগঠন কৃষক দল ও যুবদলের ৩ নেতাকর্মীকে মারধর করা হয়।
পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ফিরে গেলে সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজসহ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেওয়া বিএনপি নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে ফিরে যান। তবে ওই ঘটনায় কোন পক্ষই থানায় জিডি কিংবা অভিযোগ করেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, সকাল পৌনে ৯টার দিকে জেলা বিএনপির আহবায়ক সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা শহরের শহীদ খোকন পার্কে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান। এরপর অধিকাংশ নেতাকর্মী শহীদ মিনারের পশ্চিম পাশের গেট দিয়ে হোটেল পট্টি হয়ে নওয়াববাড়ি সড়কে দলীয় কার্যালয়ে ফিরে যান। তবে সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজসহ জেলা বিএনপির সিনিয়র ৭/৮জন নেতা শহীদ মিনারের সামনের সার্কিট হাউস রোড হয়ে দলীয় কার্যালয়ের দিকে ফিরছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী সাংসদ গোলাম মোহাম্মদকে ‘রাজাকার’ বলে স্লোগান দিয়ে তাদের ধাওয়া করেন। তখন হামলার আশঙ্কায় তারা পুলিশের সহায়তায় দ্রুত নিকটবর্তী সদর পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেন। এ সময় জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল বগুড়া জেলা কমিটির সহ-সভাপতি সামসুল হক এবং যুবদল কর্মী মাসুদ ও সোহাগকে মারপিট করা হয়।
বিএনপি নেতৃবৃন্দ যখন পুলিশ ফাঁড়ির ভেতরে অবস্থান নেন তখন তার বাইরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আবারও সাংসদ সিরাজের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। এ সময় পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। কয়েক মিনিট এভাবে স্লোগান দেওয়ার পর পুলিশের অনুরোধে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা কিছু সময় পর ওই এলাকা ত্যাগ করে। এরপর পুলিশ সদর ফাঁড়িতে আশ্রয় নেওয়া বিএনপি নেতৃবৃন্দকে নিরাপদে দলীয় কার্যালয়ে ফিরে যেতে সহযোগিতা করে। ততক্ষণে তাদের সঙ্গে শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী যোগ দেন এবং ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে পাল্টা স্লোগান দেওয়া শুরু করেন।
বগুড়া সদর থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজসহ বিএনপি নেতারা শহীদ মিনার থেকে হেঁটে আসার সময় পেছন থেকে ধাওয়া করা হয়। তবে পুলিশের দ্রুত তৎপরতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ওই ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক তিতাস বলেন, ‘বিএনপি নেতারা আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে কটূক্তিমূলক স্লোগান দেওয়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ জানিয়ে পাল্টা স্লোগান দিয়েছে মাত্র।’
তবে বগুড়া জেলা বিএনপির আহবায়ক সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ ওই ঘটনাটিকে ‘ন্যাক্কারজনক’ উল্লেখ করে বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারির মত পবিত্রতম দিনে ছাত্রলীগ নামধারী ছেলেদের এমন আচরণ সত্যিই দুঃখজনক।’
তাকে লক্ষ্য করে ‘রাজাকার’ স্লোগান দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের শব্দ অতীতে কখনও কেউ আমাকে উদ্দেশ্য করে বলেনি। তারা কেন বলছে সেটা আমার বোধগম্য নয়।’
প্রকৌশল নিউজ/এস