কোন অবস্থায় আমাদের মেরুদণ্ডে কতটুকু চাপ পড়ে?

দৈনন্দিন জীবনযাপনের তাগিদে এবং জীবিকার সন্ধানে মানুষ প্রতিনিয়ত নড়াচড়া করে। দিন-রাতে বহুবার বিভিন্নভাবে দেহভঙ্গি পরিবর্তন করতে হয়। নড়াচড়ার ফলে মেরুদণ্ডে বিভিন্ন মাত্রার চাপ বা প্রেশার তৈরি হয়। চাপ নিতে ভুল হওয়ার ফলে আমরা ব্যাক পেইনে আক্রান্ত হই।

কোন অবস্থায় আমাদের মেরুদণ্ডে কতটুকু চাপ পড়ে?

দৈনন্দিন জীবনযাপনের তাগিদে এবং জীবিকার সন্ধানে মানুষ প্রতিনিয়ত নড়াচড়া করে। দিন-রাতে বহুবার বিভিন্নভাবে দেহভঙ্গি পরিবর্তন করতে হয়। নড়াচড়ার ফলে মেরুদণ্ডে বিভিন্ন মাত্রার চাপ বা প্রেশার তৈরি হয়। চাপ নিতে ভুল হওয়ার ফলে আমরা ব্যাক পেইনে আক্রান্ত হই।

কোন অবস্থায় আমাদের মেরুদণ্ডে কতটুকু চাপ পড়ে? আসুন এ সম্পর্কে জেনে নিই-
* যখন আমরা চিত হয়ে শুয়ে থাকি, তখন আমাদের মেরুদণ্ডে সবচেয়ে কম চাপ পড়ে। এর পরিমাণ ২৫ কেজি। 
* যখন আমরা কাত হয়ে শুই, তখন আমাদের মেরুদণ্ডে চাপের পরিমাণ ৭৫ কেজি।
* যখন আমরা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি, তখন আমাদের মেরুদণ্ডে চাপ পড়ে ১০০ কেজি। 
* যখন আমরা সোজা হয়ে দাঁড়াই এবং সামনের দিকে ঝুঁকি, তখন আমাদের মেরুদণ্ডে প্রেশারের পরিমাণ ১৫০ কেজি।
* যখন দাঁড়ানো অবস্থায় সামনের দিকে ঝুঁকে কোনো বস্তুকে তোলার চেষ্টা করি, তখন মেরুদণ্ডে চাপের পরিমাণ ২২০ কেজিতে পৌঁছায়।
* যখন আমরা চেয়ারে সোজা হয়ে বসে থাকি, তখন আমাদের মেরুদণ্ডে প্রেশারের পরিমাণ ১৪০ কেজি। 
* যখন আমরা চেয়ারে বসে থাকা অবস্থায় সামনের দিকে ঝুঁকি, তখন আমাদের মেরুদণ্ডে ১৮৫ কেজি চাপ পড়ে।
* আমাদের মেরুদণ্ডে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে, যখন আমরা চেয়ারে বসে থাকা অবস্থায় ২০ ডিগ্রি সামনে ঝুঁকে ২০ কেজি ওজনের কোনো বস্তু হাত দিয়ে টেনে তুলি, তখন মেরুদণ্ডে চাপের পরিমাণ ২৭৫ কেজি পৌঁছায়।

বর্তমান সময়ে ব্যাক পেইনের সমস্যায় অনেকে ভুগছেন। একটানা শুয়ে থাকা, কম্পিউটারে বসে কাজ করা, কঠোর পরিশ্রম করা, ফ্র্যাকচার, ইনফেকশন, টিউমারসহ বিভিন্ন কারণে ব্যাক পেইন হতে পারে।

আসুন আমরা দৈনন্দিন কাজকর্ম যেমন দাঁড়ানো, বসা, শোয়া এবং কোনো বস্তু বহন করার ক্ষেত্রে সাবধান হই এবং সতর্কতা অবলম্বন করি। সঠিকভাবে ওজন তুলি এবং তা বহন করি।

চাপ কমানোর উপায়
যদি কোনো বস্তু অনেক ভারী হয়, তবে তা তুলতে আরো এক-দুজনের সাহায্য নেবেন। এতে ওজনটা ভাগ হয়ে যাবে। কোনো বস্তু তোলার সময় পা দুটি যথেষ্ট ফাঁকা করে নেবেন, এতে সাপোর্ট বাড়ে।

তুলতে যাওয়া বস্তুটির যথাসম্ভব কাছাকাছি যাবেন, বসে বা দাঁড়িয়ে যেভাবেই হোক, দূরের কোনো বস্তু তুলতে যাবেন না। আমরা অনেক সময় তাণ্ডই করি। যেমন অফিসে হাত থেকে কলম বা কাগজ পড়ে গেল, বসে থেকেই শরীর বাঁকিয়ে দূর থেকে তোলার চেষ্টা করি। তা না করে ওঠে গিয়ে কাছাকাছি গিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে তুলুন।

কোনো কিছু তোলার সময় হাঁটু ভাঁজ করবেন, পিঠ নয়। বস্তু তোলার সময় পেটের পেশি শক্ত করে নেবেন। যখন জিনিসটা হাতে নিয়ে ওঠে দাঁড়াবেন তখন মেরুদণ্ড বা পিঠ বাঁকা করবেন না, সোজা হয়ে ওঠে দাঁড়াবেন।

তোলা বা বহন করার সময় মেরুদণ্ড টুইস্ট করে (কোমর থেকে ওপরের অংশ মোচড় দেওয়া) এদিক-ওদিক তাকাবেন না। তবেই সম্ভব ব্যাক পেইনমুক্ত জীবন।

লেখক:
প্রফেসর  ডাঃ মোহাম্মদ আবু সালেহ আলমগীর
বি পি টি, এম ডি, এম পি এইচ, এম ডি এম আর, পি এইচ ডি
ব্যাক-পেইন ও পাবলিক হেলথ এবং ডিজএ্যাবিলিটি ও রিহ্যাবিলিটেশন বিশেষজ্ঞ সিনিয়র ফিজিওথেরাপি কনসালটেন্ট

সিনিয়র কনসালটেন্ট ও বিভাগীয় প্রধান
ডিপার্টমেন্ট অব ফিজিওথেরাপি মেডিসিন এন্ড রি-হ্যাবিলিটেশন
আমেরিকা বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল, মালিবাগ মোড়, ঢাকা
এ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্যঃ ০১৬৪১৫৭৬৭৮৭, ০১৭৩৮৩৯৪৩০৯