রয়েল ম্যাক্স হাসপাতাল আওয়ামী-লীগের প্রভাব মুক্ত হতে পারেনি
ঢাকার ডেমড়ার কোনাপাড়ায় কাচা বাজার এর পাশেই অবস্থিত রয়েল ম্যাক্স হাসপাতাল। ২০২১ সালে আর্ত মানবতার সেবায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিছু নম্র, ভদ্র, শিক্ষিত ও সমাজসেবক ব্যবসায়ীদের নিয়ে যাএা শুরু হয়। পরবর্তীতে তিনজন আওয়ামী-লিগের নেতার আর্থিক অনিয়ম, লুটপাট, জোর জবর দখল ও প্রতারণার কারণে আজ এই প্রতিষ্ঠানটি তার লক্ষ ও উদ্দ্যেশ্য হতে প্রথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে এবং চিকিৎসার নামে চলছে অপচিকিৎসা, লুটপাট ও আর্থিক অনিয়ম।
আওয়ামী পন্থি রোগীরা এখানে আসলে তাদের ডিসকাউন্ট ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। অপরদিকে বি এন পি ও জামায়াত পন্থি রোগীরা আসলে তাদের কম পরিমান ডিসকাউন্ট ও সঠিক চিকিৎসা সেবা দেয়া হয় না। বরং তাদের গলাকাটা চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়্ এবং অপচিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। কৈাশলে তাদের কাছ হতে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে টাকা। এলাকার লোকজন এর প্রতিবাদে পার্শ্ব বর্তী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নেয়ার কারনে এর সুনাম নস্ট হচ্ছে।
হাসপাতালটির পরিচালক ১৫ জন হলেও চেয়ারম্যান আওয়ামীলিগ নেতা প্রফেসর ডাঃ খাইরূল ইমাম- মগবাজার ইস্কাটন এলাকার বাসিন্দা ও ডেমড়ার স্থানীয় দুইজন আওয়ামী লীগ নেতা বাশের পুলের মোঃ জসিম উদ্দিন- এম ডি পদে আছেন এবং মোঃ জিল্লুর রহমান ম্যানেজার পদে আছেন। এই তিন জন সহ আরও তিনজন মিলে সকল পরিচালকদের এক প্রকার জিম্মি করে হাসপাতালটি পরিচালনা করে আসছেন তাদের মনমত ও খেয়াল-খুশিমত।
হাসপাতালের শুরু হতে এখন অব্দি হাসপালে বিনিয়োগ কৃত মোট অর্থের পরিমান এবং প্র্রতি মাসের লভ্যাংশ এবং বিনিয়োগ পরবর্তী অবশিস্ট টাকার কোন হিসেব এম ডি মোঃ জসিম উদ্দিন এখন পর্যন্ত বোর্ড মিটিংয়ে কোন পরিচালককে দেননি বরং কোন পরিচালক হিসেব চাইলে একেক সময় একক প্রকার ছল চাতুরির আশ্রয় নিয়ে আসছেন। গত তিন বছরে শেয়ার হোল্ডারদের কোন প্রকার লভ্যাংশ দেয়া হচ্ছে না এবং এ জি এম করা হচ্ছে না।
এ্যাকাউন্টটেড মোঃ আব্দুল হাই প্রতি মাসের কোন হিসাব নিকাশ বোর্ড মিটিং এ উপস্থাপন করেন না। ল্যাব ইনচার্জ মোঃ মামুনুর রশীদ কোম্পানীর কাছ হতে মেশীনারীজ ক্রয় বাবদ এবং রি-এ্যাজেন্ট বাবদ প্রতিনিয়ত কমিশন নিয়ে যাচ্ছে। মার্কেটিং ইনচার্জ মোঃ আসাদুজ্জামান তার ইচ্ছেমত টাকা খরচ করছে এবং মার্কেটিং করছে। লাভ শুন্য।
বিএনপি'র নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাএদলের সভাপতি নাহিদ ভুইয়া ও ছাএ নেতা বুলবুল হোসেন সহ আরও অনেকে ২৮শে অক্টোবর ২০২৩ সালে বিএনপি'র সমাবেশ এর সময় ফ্যাসিস্ট সরকার কতৃক আক্রান্ত হয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কোনাপাড়ার রয়েল ম্যাক্স হাসপাতালে ইমাজেন্সি বিভাগে কর্মরত ছাএ নেতা আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আসাদ এর কাছে চিকিৎসা নিতে আসে। তিনি তাদের সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন এবং তাদের দেহ হতে গুলি অপসারন করেন। এতে হাসপাতালে তিন আওয়ামীলিগ নেতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাঃ খাইরুল ইমাম, এম ডি মোঃ জসিম উদ্দিন এবং ম্যানেজার মোঃ জিল্রুর রহমান ক্ষুদ্ধ হয়ে বিএনপি'র আর কাউকে এ হাসপাতালে চিকিৎসা না দেয়ার ব্যাপারে ডাঃ আসাদকে সতর্ক করে দেন।
এর পর জুলাই ২০২৪ এর ছাএ জনতার বিল্পব এর সময় আহত বি এন পি ও জামায়াতের ছাএ জনতাকে চিকিৎসা দেয়া এবং তাদের শরীর হতে গুলি অপসারণ করার কারণে কোনাপাড়া পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এস আই সোহেল সহ একদল পলিশ ফোর্স নিয়ে রয়েল ম্যাক্স হাসপাতালে যায় এই তিন আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্বে এবং ডাঃ আসাদকে অপমান ও অপদস্থ করে গ্রেফতারের হুমকি দিয়ে আসে। এরই পরিপেক্ষিতে আওয়ামীলিগ নেতা চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাঃ খাইরুল ইমাম এর নেতৃত্বে এমডি মোঃ জসিম উদ্দিন এবং ম্যানেজার মোঃ জিল্লুর রহমান হাসপাতালের বোর্ড মিটিংয়ে কয়েকজন ডিরেক্টর এর সহায়তায় আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আসাদকে অপমান ও অপদস্থ করে হাসপাতালের পরিচালক পদ এবং আবাসিক মেডিকেল অফিসার এর পদ হতে অব্যাহতি দিয়ে তাকে হাসপাতাল হতে বের করে দেয়।
এছাড়া বিএনপি পন্থি পরিচালক প্রফেসর ডাঃ মোঃ আবু সালেহ আলমগীরকে তার চেম্বারে বসতে না দেয়া, তার রোগীর সিরিয়াল না নেয়া এবং তার চেম্বারের দরজা হতে তার নেমপ্লেট ফেলা দেয়া এবং তাকে হাসপাতালের পরিচালক পদ হতে বের করে দেয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার উদ্দ্যেগ নেয় মাস্টারমাইন্ড আওয়ামীলিগ নেতা এমডি মোঃ জসিম উদ্দিন।
অপরদিকে পরিচালক ম্যানেজার মোঃ জিল্লুর রহমান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও পরিচালক মোঃ ইয়াকুব আলী চৈাধুরী জামায়াত পন্থি হওয়ায় সব সময় তাকে হেনস্থার অপচেস্টা করে আসছিল। গত মাসে জামায়াতের পক্ষ হতে পরিচালক মোঃ ইয়াকুব আলী চৈাধুরী হাসপাতালে একটি মুসলমানির ক্রাম্প আয়োজনের জন্য চেস্টা করেন। এতে পরিচালক ম্যানেজার মোঃ জিল্রুর রহমান খিপ্ত হয়ে পরিচালক চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাঃ খাইরুল ইমাম ও এম ডি মোঃ জসিম উদ্দিনকে ব্যবহার করে জামায়ামের কোন ক্যাম্প হাসপাতালে করা যাবে না বলে জানিয়ে দেন। পরবর্র্তীতে পার্শ্ব বর্তী ইসলামমিয়া জেনারেল হাসপাতাল ক্যাম্পটি করে।
৫ই আগস্ট পরবর্তী ছাএ জনতার বিজয়ের পর সারা বাংলাদেশে সংস্কার শুরু হলেও, এখনও রয়েল ম্যাক্স হাসপাতালটি এই তিন আওয়ামীলিগ নেতার দখলেই রয়ে গেছে এবং তারা বহাল তবিয়তেই আছেন। বাকি পরিচালকগন এখানে টাকা বিনিয়োগ করে লাভ তো দুরের কথা মুল টাকা নিয়ে তারা সঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। অপর দিকে এই তিন আওয়ামীলিগ নেতা তাদের ইচ্ছেমত ডিরেক্টর ঢুকাচ্ছেন এবং বের করে দিচ্ছেন এবং টাকা পয়সা লুটপাট করে যাচ্ছেন ইচ্ছেমত।
এমতাবস্থায় তত্বাবধায়ক সরকারের দৃস্টি আকর্ষন করছি এই নিরিহ পরিচালকদের এহেন অবস্থা হতে রাহুমুক্ত করে এবং দখলদারিত্ব মুক্ত করে হাসপাতালটিকে এলাকার সেবা মুলক প্রতিষ্ঠানে পরিনত করে আওয়ামীলিগ মুক্ত করা হোক।