বিধিনিষেধের ষষ্ঠদিন : লোক চলাচল বৃদ্ধির সাথে যানজট
করোনা মহামারির সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি পার করছে দেশ। গতকাল সোমবারও দেশে সর্বোচ্চ আক্রান্ত শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সারাদেশে সাতদিনের কঠোর লকডাউন ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
করোনা মহামারির সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি পার করছে দেশ। গতকাল সোমবারও দেশে সর্বোচ্চ আক্রান্ত শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সারাদেশে সাতদিনের কঠোর লকডাউন ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে সংক্রমণ মোকাবিলায় দেশজুড়ে চলছে কঠোর বিধিনিষেধের (লকডাউন) ষষ্ঠদিন যাচ্ছে। শুরু থেকেই কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নেমেছে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও র্যাব। অব্যাহত রয়েছে গ্রেপ্তার, জরিমানা ও মামলা। এরপরও মানুষের চলাচল সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
প্রথমদিকে রাজধানী ঢাকার সড়কগুলো অনেকটা ফাঁকা থাকলেও এখন আর সে অবস্থা নেই। মঙ্গলবার মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন সড়কে রিকশা, ব্যক্তিগত গাড়িসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল বেড়েছে। এমনকি সকাল থেকে কোথাও কোথাও যানজটও লেগে যাচ্ছে। এছাড়া বাড্ডা, আগারগাঁও, বছিলা, মোহাম্মদপুর, আসাদগেট, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজারের সড়কগুলোতে যানবাহনের পাশাপাশি মানুষের ভিড়ও দেখা গেছে।
রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মঙ্গলবার অন্যদিনের তুলনায় সড়কগুলোতে মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে। গত পাঁচদিন সড়কে মানুষের সংখ্যা কম ছিল। এছাড়া যানবাহনও বেড়েছে। গুরুত্বূপূর্ণ ট্রাফিক সিগন্যালগুলোতে যানজটও দেখা গেছে। তবে চেকপোস্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ি চোখে পড়ার মতো।
সকালে যাত্রাবাড়ী এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, রিকশা আর ভ্যানে করে কর্মজীবী মানুষ নিজের গন্তব্যে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারী। লকডাউনের শর্ত অনুযায়ী এসব কর্মীদের জন্য প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব যানবাহনের ব্যবস্থা করার কথা থাকলেও কেউ তা করেনি। ফলে রিকশা বা হেঁটেই গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা। এদিকে আবার স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ বা তিনগুণ রিকশা ভাড়াও গুনতে হচ্ছে অনেক যাত্রীকে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ট্রাফিকের মতিঝিল জোনের সহকারী কমিশনার এসএম বজলুর রশিদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মতিঝিল এলাকায় ব্যাংক-বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাই অফিস সময়ের শুরুতে এ এলাকায় গাড়ির অল্প চাপ ছিল। তবে এখন আর তেমন চাপ নেই।
তিনি এও বলেন, আমরা তল্লাশি করছি। কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া বের হলে চালক ও গাড়ির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে একই চিত্র বাসাবো ও মানিকনগর এলাকায়ও। এখানকার অধিকাংশ কর্মজীবী মানুষ মতিঝিলের বিভিন্ন অফিসে চাকরি করেন। এসব এলাকায় রিকশা ও ভ্যানের পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়িও দেখা গেছে। সকাল থেকে নগরীর ফকিরাপুল, রাজারবাগ, মালিবাগ চৌধুরী পাড়া, বাড্ডা, দৈনিক বাংলা, বাংলা মোটর, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকাতেও এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে, লকডাউনে গতকাল সোমবার থেকে সারাদেশে ট্রাকে করে স্বল্পমূল্যে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে টিসিবির পণ্য কিনতে লোকজনকে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। তবে সেখানে কোনোরকম স্বাস্থ্যবিধির পরিপালন করা হচ্ছে না।
পণ্য কিনতে আসা মানুষজনের অভিযোগ, নির্ধারিত সময়েও ট্রাকগুলো নির্ধারিত এলাকায় আসে না। এতে আগে পণ্য সংগ্রহ করার জন্য অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। ফলে গাদাগাদি করেই দাঁড়াতে হচ্ছে তাদের। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তারা।