অশ্লীল ভিডিও তৈরির অভিযোগে ৫ জন আটক
ফেসবুক ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্মে আপত্তিকর ভিডিও কনটেন্ট তৈরী ও সরবরাহের মাধ্যমে অশ্লীলতা ছড়ানোর দায়ে সিআইডির সাইবার পুলিশ কন্টেট নির্মাতা, প্রযোজক, অভিনেতাসহ ৫ জনকে আটক করেছে।
ফেসবুক ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্মে আপত্তিকর ভিডিও কনটেন্ট তৈরী ও সরবরাহের মাধ্যমে অশ্লীলতা ছড়ানোর দায়ে সিআইডির সাইবার পুলিশ কন্টেট নির্মাতা, প্রযোজক, অভিনেতাসহ ৫ জনকে আটক করেছে।
মঙ্গলবার ঢাকা ও গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ‘কমেট মিডিয়া’ এর পরিচালক, কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও প্রযোজক মো মনির হোসেন রাজু ‘কেএমএইচ টিভি’ এর পরিচালক, কনটেন্ট ক্রিয়েটর, প্রযোজক ও অভিনেতা কাজী মনির হোসেন, ‘কেএমএইচ টিভি’ এর ক্যামেরাম্যান রফিকুল ইসলাম, ইউটিউব চ্যানেল ‘এসকে আগুন’ এর পরিচালনাকারী ও অভিনেতা এস কে আগুন ও বিভিন্ন অশ্লীল ভিডিওর অভিনেতা ও পরিচালক আসিফ আরাফাতসহ মোট ০৫ জনকে আটক করা হয়।
সিআইডির সাইবার পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে সোস্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন ধরণের অনলাইন প্লাটফর্মে বিভিন্ন ধরণের অশ্লীল ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্মে আপলোড করছে এক শ্রেণির অসাধু চক্র। এ ধরণের অশ্লীল ভিডিওতে আসক্ত হচ্ছে দেশের যুব সমাজ। তারা এ সকল অশ্লীল ভিডিওতে আসক্ত হয়ে সামাজিক অপরাধসহ বিভিন্ন ধরণের অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে। পাশাপাশি বৃদ্ধি পাচ্ছে নৈতিক অবক্ষয়, নারী নির্যাতনসহ পারিবারিক বিচ্ছেদের ঘটনা। সেইসাথে ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্মে অশ্লীল ভিডিও প্রচারের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ উর্পাজন করছে এ চক্রটি।
বিষয়টি সাইবার পুলিশ সেন্টারের নজরে আসলে এ ধরণের অশ্লীল ভিডিও কনটেন্ট তৈরির সাথে জড়িত কনটেন্ট নির্মাতা, প্রযোজক, অভিনেতাসহ চক্রের সদস্যদের সনাক্তে কাজ শুরু করে সিআইডির সাইবার পুলিশ। সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিমের অনুসন্ধানে অশ্লীল ভিডিও কনটেন্ট তৈরির সাথে জড়িত এরকম ১৫/১৬টি চক্রের সন্ধান পায়।
আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা অভিনয়ের কথা বলে বিভিন্ন আগ্রহী অভিনেতা- অভিনেত্রীদের দিয়ে এ ধরণের অশ্লীল ভিডিও তৈরীর কাজ করে থাকে। পরবর্তীতে তৈরীকৃত ভিডিওগুলো বিভিন্ন চটকদার শিরোনামে ইউটিউবসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্মে প্রচার করে। এই চক্রটি প্রচারকৃত ভিডিও বিভিন্ন চ্যানেল ও ডিজিটাল প্লাটফর্মে সাবসক্রাইবার ও ভিউ বৃদ্ধির মাধ্যমে নিয়মিত অর্থ আয় করে আসছে। আটকদের নিকট থেকে এই সকল অশ্লীল ভিডিও তৈরিতে ব্যবহৃত ক্যামেরা, হার্ডড্রাইভ, পেনড্রাইভ ও মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে। এই সকল অশ্লীল ভিডিও কন্টেট তৈরীর সাথে জড়িত অন্যান্য যে সকল অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ যারা এ পরিচালনার সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে বলে জানায় সিআইডির সাইবার পুলিশ।
সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন সাইবার পুলিশ সেন্টারের সিআইডি‘র অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কামরুল আহসান। তিনি বলেন, ডিজিটাল প্লাটফর্ম পরিচ্ছন্নতা রাখার জন্য নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে সিআইডির সাইবার পুলিশ। ইউটিউব, ফেসবুকের পাশাপাশি অন্যান্য যে অ্যাপভিত্তিক প্লাটফর্ম লাইকি, টিকটকেও নজরদারি করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাইবার পুলিশ সেন্টারের সাইবার ইনভেস্টিগেশন এন্ড অপারেশনসের বিশেষ পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম জানান, যেসব চক্র দেশের বাহিরে থেকে এ ধরনের কন্টেন্ট তৈরি করে প্রচার করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার জন্য মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বিটিআরসি এবং সাইবার পুলিশ সেন্টার নীতিমালা তৈরি করার কাজ করে যাচ্ছে। নীতিমালা তৈরি হবার পর যারা এধরনের কাজ করে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাসহ ডিজিটাল প্লাটফর্ম থেকে সেসব কন্টেন্ট অপসারণ করা সহজ হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল মাসুদ এবং বিশেষ পুলিশ সুপার ডাঃ কানিজ হোসেন জাহান।
প্রকৌশলনিউজ/এসআই