জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ভেঙে দেয়া হয়েছে : সিটিটিসি প্রধান
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে Smart Approach পদক্ষেপ গ্রহণ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসির তৎপরতায় ভেঙে দেয়া হয়েছে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম(সিটিটিসি) কর্তৃক পরিচালনা করা হয়েছে ২৩ টি High Risk Operation। যাতে নিহত হয়েছে ৬৩ জন সন্ত্রাসী।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে Smart Approach পদক্ষেপ গ্রহণ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসির তৎপরতায় ভেঙে দেয়া হয়েছে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম(সিটিটিসি) কর্তৃক পরিচালনা করা হয়েছে ২৩ টি High Risk Operation। যাতে নিহত হয়েছে ৬৩ জন সন্ত্রাসী।
আজ ১ জুলাই বৃহস্পতিবার হলি আর্টিজান হামলার পাঁচ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও সিটিটিসি প্রধান মোঃ আসাদুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে হলি আর্টিজান হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তিনি বলেন, ভয়াবহ হামলার তদন্তভার সিটিটিসিকে দেয়া হলে সিটিটিসি স্বল্পতম সময়ে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত সকল সন্ত্রাসী, পরিকল্পণাকারী, অর্থ যোগানদাতাসহ অভিযুক্ত সকলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করে।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান হিসেবে সিটিটিসি গ্রহণ করেছে কঠোর (Hard Approach) ও কোমলের (Soft Approach) সমন্বিত পদক্ষেপ অর্থাৎ Smart Approach। Smart Approach-এর অংশ হিসেবে সিটিটিসি আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন সেমিনার ও কর্মশালা আয়োজন করেছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়, পুলিশ সদস্য, কারা কর্মকর্তা ও কারারক্ষী, জনপ্রতিনিধি, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, এনজিও, সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিক, ধর্মীয় পান্ডিত্যসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ (Religious Scholar) উগ্রবাদী/সন্ত্রাসী (জামিনপ্রাপ্ত), তাদের বাবা-মা ও পরিবারের সদস্য, সন্ত্রাসী ঘটনার ভূক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সদস্য এবং বিভিন্ন অংশীজনের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত কর্মশালা।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের অংশগ্রহণে এ পর্যন্ত এ ধরনের ১৭৪ টি আলোচনা কর্মশালা আয়োজন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে ৩৯ হাজার ৪০০ জনকে উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সচেতন করে তোলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলের মতামতের ভিত্তিতে সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে একটি সমন্বিত কর্মকৌশল গ্রহণের গুরুত্ব উপলব্ধি করে সিটিটিসি ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ, নাগরিক সমাজ, শিক্ষা-গবেষণা ক্ষেত্রে কর্মরত ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, আন্তর্জাতিক এনজিওসমূহের প্রতিনিধিগণের অংশগ্রহণে দেশে প্রথমবারের মত উগ্রবাদ বিরোধী জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করেছে। সাইবার স্পেসকে নিরাপদ রাখতে সিটিটিসি কর্তৃক সাইবার মনিটরিংসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর জঙ্গি বিরোধী জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে সিটিটিসি নিরলসভাবে কাজ করছে। জঙ্গি সংগঠনগুলোর বড় ধরনের নাশকতা করার সক্ষমতা এখন একে বারেই নেই। সিটিটিসি তাদের নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাত পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর রোডের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় পাঁচজনের একটি সন্ত্রাসী দল উপস্থিত সাধারণ মানুষের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীদের নৃশংসতার বলি হয় দেশী-বিদেশী মোট ২০ জন নাগরিক। এদের প্রত্যেককেই নির্মমভাবে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। নিষ্ঠুরতার শিকার হয়ে মারা যান ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, ১ জন ভারতীয়, ১ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকান এবং ২ জন বাংলাদেশী নাগরিক। সেদিনের সম্মিলিত প্রতিরোধ অভিযানে মোট ৩২ জনকে জীবিত উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় ৪ জুলাই, ২০১৬ সন্ত্রাস বিরোধী আইনে গুলশান থানায় মামলা রুজু হয়। তদন্তে ২১ জন আসামীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। যাদের মধ্যে পাঁচজন অপারেশন থান্ডারবোল্টে নিহত হন এবং পরবর্তী সময়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে আরও আটজন নিহত হন। বিজ্ঞ আদালত যুক্তিতর্ক শেষে সাতজনকে মৃত্যুদন্ড ও একজনকে খালাস প্রদান করেন।
প্রকৌশল নিয়ে নিউজ/এমআরএস