ঢাদসিকে ছুটির দিনেও অভিযান অব্যাহত
ছুটির দিনেও ৬ ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে খাবার পরিবেশনসহ স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করায় ১৩ মামলায় ৩৩ হাজারের অধিক জরিমানা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনের আওতায় আরোপিত বিধিনিষেধ তদারকিতে শুক্রবার ছুটির দিনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) আওতাধীন এলাকায় একযোগে ৬ ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করা হয়।
ঢাদসিক এর অঞ্চল ১,২ ও ৬ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের (আনিক) পাশাপাশি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতসমূহের নেতৃত্ব দেন।
অভিযানে সরকারি বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে হোটেলে বসিয়ে খাবার পরিবেশন, স্বাস্থ্যবিধি না মানা এবং অনুমোদনবিহীন দোকান খোলা রাখায় মোট ১৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় মোট ৩৩ হাজার ৭ শত টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
ঢাদসিক এর আঞ্চল-১ এর আনিক মেরিনা নাজনিন শুক্রবার সাত মসজিদ রোড, ধানমণ্ডি ২৭, পান্থপথ, সোনারগাও রোড, বেইলী রোড ও মগবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। ধানমণ্ডি ২৭ এ বিকেল ৩টার পরেও একটি চশমার দোকান খোলা রাখায় ৩ হাজার টাকা, বিনা কারণে রাস্তায় বের হওয়ার একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে ১ হাজার টাকা এবং বেইলি রোড এলাকায় অনুমোদনবিহীন ফুটপাতের ওপর জিলাপি বিক্রি করায় ভাজা ও বিক্রি করায় এ-ওয়ান বেকারীকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অভিযানে আনিক-১ মেরিনা নাজনিন ৩টি মামলা দায়ের ও নগদ ৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
অঞ্চল-২ এর আনিক সুয়ে মেন জো এর তত্ত্বাবধানে ফকিরাপুল বাজার, মুগদা কাঁচাবাজার, ওয়াসা বাজার ও মান্ডা মেইন রোড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় মাস্ক না পরায় ১০ ব্যক্তিকে সাময়িক সময় আটকে রেখে পরবর্তীতে তাদেরকে মাস্ক পরিধান করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় শারিরীকভাবে অক্ষম এমন আরও কয়েকজনকে মাস্ক পরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা এবং অননুমোদিতভাবে দোকান খোলা রাখায় প্রায় ১০০ ব্যক্তি ও দোকানকে সতর্ক করা হয়।
অঞ্চল -৬ এর আনিক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সরকার নগরীর নন্দী পাড়া বাজার এলাকায় আজ জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন এবং লকডাউনে সরকার আরোপিত বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলার অনুরোধ করেন।
এদিকে, ঢাদসিক এর সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত আজ অঞ্চল-৬ এর ডেমরা, সারুলিয়া, ডেমরা ষ্টাফ কোয়ার্টার ও বনশ্রী'র বিভিন্ন বাজার পরিদর্শন করেন। এ সময় সরকারী নির্দেশনা না মানায় ৩টি মামলার মাধ্যমে ৭ হাজার ৭ শত টাকা জরিমানা আদায় করেন।
কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ শুক্রবার যাত্রাবাড়ী, মাতুয়াইল, ডেমরা, কোনাপাড়া, শনির আখড়া এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় সরকারি নির্দেশ ভঙ্গ করে বেলা ৩টার পরেও দোকান খোলা রাখা, হোটেলে বসিয়ে লোকজনকে খাবার পরিবেশন করা, সরকার ঘোষিত অনুমোদিত দোকান ব্যতীত অন্যান্য দোকান খোলা রাখায় আদালত ৫টি মামলা দায়ের এবং সর্বমোট ১৯ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় বেলা ৩টার পরেও দোকান খোলা রাখায় শতাধিক দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা কবীর ত্রপা অঞ্চল ৩ এর আওতাধীন মৌলভীবাজার, চকবাজার ও ইসলামবাগ বাজার অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় সরকারি নির্দেশনা না মানায় ২ মামলায় মামলার ১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ বলেন, “অধিকাংশ ক্ষেত্রে জনগণ লকডাউন মেনে চললেও দু'য়েকটি জায়গায় সরকারি নির্দেশ ভঙ্গ করে হোটেলে বসিয়ে লোকজনকে খাবার পরিবেশন করা, বেলা ৩টার পরেও দোকান খোলা রাখা এবং অননুমোদিত দোকান খোলা রাখায় আজ ৫টি মামলা দায়ের করেছি। এসব মামলায় ১৯ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আদায় করা হয়েছে।"
অভিযানে সব ক'টি আদালতই লকডাউনের নির্দেশনা মেনে চলতে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষে মাইকিং করেন। এছাড়াও বিনা প্রয়োজনে অযথা বাড়ির বাইরে বের না হওয়া, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ওপর জোর দেন।
প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস