নারী চিকিৎসককে হয়রানি : এফডিএসআরের বিবৃতি

রাজধানীতে লকডাউন চলাকালীন সময়ে রাস্তায় নারী চিকিৎসককে হয়রানি প্রতিবাদে এফডিএসআর বিবৃতি দিয়েছে।

নারী চিকিৎসককে হয়রানি : এফডিএসআরের বিবৃতি

রাজধানীতে লকডাউন চলাকালীন সময়ে রাস্তায় নারী চিকিৎসককে হয়রানি প্রতিবাদে এফডিএসআর বিবৃতি দিয়েছে।

রোববার ফাউন্ডেশন ফর ডক্টরস সেফটি, রাইটস এন্ড রেসপন্সিবিলিজ (এফডিএসআর) এর চেয়ারম্যান ডা. আবুল হাসনাৎ মিল্টন ও মহাসচিব ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন এই বিবৃতি দেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লকডাউনের প্রথম দিনেই প্রচুর সংখ্যক চিকিৎসক ডিউটিতে যাবার পথে একাধিক স্থানে পুলিশ কর্তৃক হেনস্তার শিকার হবার প্রেক্ষিতে এফডিএসআরের প্রতিবাদের মুখে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এ ধরণের হয়রানি বন্ধের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল। স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকেও সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারী করা হয়েছিল। তারপর থেকে এ ধরণের হয়রানির সংখ্যা কমলেও লকডাউনের পঞ্চম দিনে, আজ রবিবার হাসপাতাল থেকে ডিউটি শেষে ফেরার পথে এলিফ্যান্ট রোডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনি একদল পুলিশ কর্তৃক হেনস্তার শিকার হয়েছেন। ইতিমধ্যে এই ঘটনার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভাবে আংশিক ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। 

আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি যে, একদল পুরুষ পুলিশ একজন মহিলা চিকিৎসককে প্রকাশ্য রাজপথে হেনস্তা করছে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে ডাক্তাররা যখন জীবনের ঝুকি নিয়ে সন্মুখ সারিতে লড়ছে, হাসপাতালে অসংখ্য কোভিড রোগীর চিকিৎসা শেষে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফেরার পথে পুলিশ ডা. সাঈদা শওকত জেনির গাড়ি থামিয়ে তার কাছে পরিচয় পত্র দেখতে চায়। এসময়ে নিজের পরিচয় ও গাড়িতে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পরিচালক কর্তৃক ইস্যুকৃত মুভমেন্ট পাশ, বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সম্বলিত স্টিকার ও বিএসএমএমইউর লোগোসহ ডাক্তারের নামাঙ্কিত অ্যাপ্রন দেখালে সবকিছুকে ভুয়া বলে পুলিশ ডা. জেনিকে চরমভাবে উত্যক্ত করে। এর মাধ্যমে পুলিশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও চিকিৎসক সমাজকেও হেয় করেছে। এই ঘটনার কোন ভিডিও করা হয় নি। অথচ ডা. জেনিকে হেনস্তা করার মাধ্যমে উত্তেজিত করে ঘটনার আংশিক ভিডিও করা হয়েছে যেখানে আমরা দেখেছি, পুলিশ ডা. জেনির কাছে অন্যায়ভাবে মুভমেন্ট পাশ চেয়েছে। অথচ ডাক্তারদের মুভমেন্ট পাশ লাগবে না বলে ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা আরো দেখেছি, পতিতাবৃত্তির পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত পাপিয়ার সাথে পুলিশ ডা. জেনির তুলনা করেছে, যা একজন নারী চিকিৎসকের জন্য চরম অবমাননাকর। 

চিকিৎসকের পাশাপাশি বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী বীর বিক্রমের কন্যার পরিচয় দেবার পরেও পুলিশ যেভাবে উদ্ধত ভাষায় কথা বলেছে, তা যুগপৎ আমাদের ব্যথিত এবং ক্ষুব্ধ করেছে। আমরা ভাবতেই পারি না, একজন মহিলা চিকিৎসককে এতগুলো পুরুষ পুলিশ মিলে এমন ঔদ্ধত্যের সাথে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে? পুলিশের এই অন্যায়ের প্রতিবাদে সাহসের সাথে রুখে দাঁড়ানোর জন্য আমরা ডা. সাঈদা শওকত জেনিকে অভিনন্দন জানাই। পাশাপাশি করোনার এই দু:সময়ে চিকিৎসক হেনস্তাকারী পুলিশদের বিরূদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। সেই সাথে, মহিলাদের সাথে কথা বলবার জন্য রাজপথে পর্যাপ্ত সংখ্যক মহিলা পুলিশ নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি। 

প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস