পাকিস্তানকে ক্ষমা করার জন্য জাফরুল্লাহ'র দাবি বিএনপি’র অন্তর্গত বক্তব্য
‘পাকিস্তানকে ক্ষমা করার জন্য ডা. জাফরুল্লাহ'র দাবি আসলে বিএনপি’র অন্তর্গত বক্তব্য’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
‘পাকিস্তানকে ক্ষমা করার জন্য ডা. জাফরুল্লাহ'র দাবি আসলে বিএনপি’র অন্তর্গত বক্তব্য’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত প্রয়াত অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী স্মরণসভায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে তিনি একথা বলেন। তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বিশেষ অতিথি হিসেবে সভায় বক্তব্য রাখেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ডা. জাফরুল্লাহ সাহেব পাকিস্তানকে ক্ষমা করে দেয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন। যেখানে পাকিস্তানের কাছে আমরা দাবি করছি যে, পাকিস্তান ক্ষমা চাক, সেখানে বিএনপি নেতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বললেন, পাকিস্তানকে ক্ষমা করে দেয়ার জন্য। এটি জাফরুল্লা সাহেবের বক্তব্য নয়, এটি হচ্ছে পুরো বিএনপি’র অন্তর্গত বক্তব্য। তারা যে এখনো পাকিস্তানকে ভুলতে পারছে না, এটি তারই বহিপ্রকাশ। আমি এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই।’
‘আজকের সভা থেকে দাবি করি পাকিস্তান আমাদের কাছে ক্ষমা চাক’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালিদের ওপর, বাংলাদেশের মানুষের ওপর ’৭১ সালে যে অন্যায় ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, সেজন্য বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
বরেণ্য অভিনেত্রী কবরী আজীবন বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে বুকে ধারণ করেছেন এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার পাশে থেকেছেন উল্লেখ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে ১৯৫৭ সালে এফডিসি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রের যাত্রা শুরুর কয়েক বছর পরেই সারাহ বেগম কবরীর আবির্ভাব। প্রায় পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে তিনি যেভাবে আমাদের চলচ্চিত্র অঙ্গণকে সমৃদ্ধ করে গেছেন এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ থাকবে। তার অভিনীত বিভিন্ন চলচ্চিত্র এখনো অম্লান। এখনো আমরা তার অভিনীত ছবিগুলো দেখে আবেগতাড়িত হই। সুচিত্রা সেনের পর আরেকজন সুচিত্রা সেন হয়নি। সারাহ বেগম কবরীর মতো আর একজন শিল্পী কখন হবে, সেটি বলা মুশকিল।’
নিজস্ব সংস্কৃতিরক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে ড. হাছান বলেন, ‘আমরা যেন বিজাতীয় সংস্কৃতিতে গা ভাসিয়ে না দেই, আমাদের সংস্কৃতিটাকে যেন লালন করি এবং ঊর্ধ্বে তুলে ধরি। এখন রবীন্দ্র সংগীত যেভাবে ব্যান্ডের সাথে গাওয়া হচ্ছে, রবিঠাকুর যদি বেঁচে থাকতেন, প্রচন্ড লজ্জা পেতেন। আমরা বাঙালিরা বিত্তে ধনী না হতে পারি কিন্তু আমাদের সংস্কৃতি, ভাষা, কৃষ্টিতে আমরা পৃথিবীর মধ্যে একটা ধনী জাতি।’
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান তার বক্তৃতায় সারাহ বেগম কবরীকে কিংবদন্তী অভিনেত্রী হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, কবরী তার অভিনিত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যদিয়ে বাংলার আকাশে উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে চিরভাস্বর থাকবেন। তিনি এসময় তার আত্মার শান্তি কামনা করেন।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার পরিচালনায় সভায় অপরাপর বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট বলরাম পোদ্দার, এম এ করিম, অভিনেত্রী সুজাতা, দিলারা ইয়াসমিন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল, অভিনেত্রী তারিন জাহান, সাংবাদিক সুজন হালদার, মানিক লাল ঘোষ, ব্যারিস্টার সোহরাব খান চৌধুরীসহ জোট নেতৃবৃন্দ।
প্রকৌশল নিউজ /এমআরএস