প্রতারণার আরেক মামলায় ইভ্যালির রাসেলের আবারও এক দিনের রিমান্ড
রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের আরেক মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেলের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান রাসেলের স্ত্রী শামীমা নাসরিনের রিমান্ড ও জামিনের উভয় আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. হাসিবুল হক শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ধানমন্ডি থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হুদা উভয় আসামির সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
এর আগে দুপুর দেড়টায় গুলশান থানার একই অভিযোগের মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে তাদের সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। সরাসরি সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। সেখান থেকে বেলা ৩টার দিকে আদালতের এজলাসে তোলা হয়।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, মেট্রো কভারেজ, স্মার্ট ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম চকদার তার মালিকানাধীন চারটি কোম্পানির মাধ্যমে যথাক্রমে- ১। মেট্রো কভারেজ-১০,৫৮,২৭২.৫০/- (দশ লক্ষ আটান্ন হাজার দুইশত বাহাত্তর টাকা পঞ্চাশ পয়সা), ২। স্মার্ট ফুট অ্যান্ড বেভারেজ-১৩,৪২,৮৫০/- (তের লক্ষ বিয়াল্লিশ হাজার আটশত পঞ্চাশ টাকা), ৩। ফ্রীডম এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট বিডি-৭,৩০,৫৯৭/- (সাত লক্ষ ত্রিশ হাজার তেইশ টাকা), ৪। ফিউচার আইটি-৪,৫৩,৮২৩/- (চার লক্ষ তিপ্পান্ন হাজার আটশত তেইশ টাকা) সহ সর্বমোট-৩৫,৮৫,৫৪২.৫০/- (পয়ত্রিশ লক্ষ পঁচাশি হাজার পাঁচশত বিয়াল্লিশ টাকা পঞ্চাশ পয়সা) টাকার পণ্য আসামিদের সরবরাহ করেন। কিন্তু আসামিরা গত মে ২০২১ ইং তারিখে পোস্ট ডেটের একটি চেক গত ৩০/০৬/২১ ইং তারিখ উল্লেখ করে দিলেও পর্যাপ্ত টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে না থাকায় চেকটি ব্যাংক কর্তৃক রিটার্ন আসে। গত ২৯/০৮/২০২১ ইং তারিখ বাদী পাওনা টাকা পরিশোধে তাদেরকে চিঠি মারফত জানানোর পরও তারা বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। মামলার আসামিরা বাদীকে বিভিন্ন ইমেল এর মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে পণ্য সরবরাহের ত্রিশ দিনে মধ্যে বাদীর পাওনা সমুদয় টাকা পরিশোধ করার অঙ্গীকার ও চুক্তিনামা স্বাক্ষর করেন। বর্তমান পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য তাদের কারো সঙ্গে বাদী যোগাযোগ করতে পারে নাই। তাদের অফিসে গিয়ে বাদীর পাওনা টাকা চাহিলে বিভিন্ন তালবাহানা সহ আসামিরা বাদীর সঙ্গে খারাপ আচরণসহ প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। তাই আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের পুলিশ রিমান্ড একান্ত প্রয়োজন।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম গুলশান থানার মামলায় এ আসামিদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তার আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে র্যাব এই দম্পতিকে গ্রেপ্তার করে। এরও আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত গভীর রাতে আরিফ বাকের নামের এক গ্রাহক মোটরসাইকেলসহ বেশ কয়েকটি ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকার অর্ডারি পণ্য না পেয়ে গুলশান থানায় রাসেল ও নাসরিনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেন। মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, ইভ্যালি পণ্য বিক্রির নামে নানা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তার মতো অসংখ্য গ্রাহকের ৭০০-৮০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
বহুল আলোচিত-সমালোচিত এই প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছে দেনার পরিমাণ ৪০৩ কোটি টাকা। আর ইভ্যালির চলতি সম্পদের পরিমাণ মাত্র ৬৫ কোটি টাকা। ৩৩৮ কোটি টাকাই কোম্পানির কাছে নেই।
প্রকৌশলনিউজ/সু