স্বামী ৬ টুকরো, স্ত্রী'র পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন 'ইমাম'

রাজধানীর দক্ষিণখানে স্ত্রীর সঙ্গে মসজিদের ইমামের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের কথা জেনে ফেলার জেরে যুবক মোহাম্মদ আজহারকে ৬ টুকরো করে হত্যা করা হয়। পরিকল্পিত এই হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী ছিলেন আজহারের স্ত্রী আসমা বেগম। আর বাস্তবায়ন করেন মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমান।

স্বামী ৬ টুকরো, স্ত্রী'র পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন 'ইমাম'

রাজধানীর দক্ষিণখানে স্ত্রীর সঙ্গে মসজিদের ইমামের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কের কথা জেনে ফেলার জেরে যুবক মোহাম্মদ আজহারকে ৬ টুকরো করে হত্যা করা হয়। পরিকল্পিত এই হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী ছিলেন আজহারের স্ত্রী আসমা বেগম। আর বাস্তবায়ন করেন মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমান।

মঙ্গলবার সকালে নিহতের মরদেহ উদ্ধারের পর বিকালে আব্দুল্লাহপুর থেকে র‍্যাব আসমাকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপরই আসমা র‍্যাবের কাছে পরকীয়া সম্পর্ক ও হত্যার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেন। এরপর আসমাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশের এলিট ফোর্স বাহিনী র‍্যাপিট এ্যাকশন ব্যাটালিন (র‍্যাব) এর হেডকোয়ার্টারের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ইমাম আব্দুর রহমানের সঙ্গে আসমার তিন মাস ধরে অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি তার স্বামী আজহার টের পাওয়ায় তাকে হত্যা পরিকল্পনা করে তারা দুজন (আসমা ও ইমাম আব্দুর রহমান)। আসমা ইমামকে বলেন, তার স্বামীকে মসজিদে ডেকে নিয়ে শেষ করে (হত্যা করা) দিতে হবে। এরপরই আজহারকে কুপিয়ে হত্যা করে মরদেহ গুম করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণখানের সরদার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম আব্দুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তিনি হত্যার সঙ্গে নিজের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

র‍্যাব জানায়, ১৯ মে হত্যাকান্ডের দিন এশার নামাজের পর নিহত আজহারের সঙ্গে ইমাম আব্দুর রহমানের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে আব্দুর রহমান ধারালো অস্ত্র দিয়ে আজহারের ঘাড়ে আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। পরে মসজিদের ইমামের রুমেই ফরজের আযানের আগ পর্যন্ত আজহারকে কুপিয়ে ছয় টুকরা করেন ইমাম নিজেই। এরপর মসজিদের সেফটি ট্যাংকে মরদেহ লুকিয়ে রাখা হয়।

এর আগে, মঙ্গলবার বিকালে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করে র‍্যাব। এসময় তারা জানায়, সোমবার মসজিদের সিঁড়িতে রক্তের দাগ ও সেফটি ট্যাংক থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। এছাড়া স্থানীয় আজহারকে ১৯ তারিখ থেকে নিখোঁজ ছিল। এমন ঘটনায় অনুসন্ধান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে র‍্যাব ইমামকে আটক করে এবং জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার ঘটনা জানতে পারে। এ সময় অভিযুক্তের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত তিনটি চাকু ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

র‍্যাব আরো জানায়, মাওলানা মো. আব্দুর রহমান সরদারবাড়ি জামে মসজিদে ৩৩ বছর ইমামতি করে আসছিলেন। নিহত আজহারের চার বছরের ছেলে মসজিদের মক্তবে পড়াশোনা করত। নিহত আজহারও তার কাছে কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করতেন। এই সুবাদে তাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল। ১৯ মে মাওলানা আব্দুর রহমানের সঙ্গে আজহারের কথা কাটাকাটি হয়। কথাকাটির এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আজহারের গলার ডানপাশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে আব্দুর রহমান। পরে হত্যাকান্ডের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে হত্যাকারী ভিকটিমের লাশ টুকরো টুকরো করে সরদার বাড়ি জামে মসজিদের সেপটিক ট্যাংকে লুকিয়ে রাখে। এরপর থেকে ইমাম আব্দুর রহমান মসজিদে নিজের রুমেই অবস্থান করছিলেন।

প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস