এসপি বিপ্লবের সহযোগিতায় আলমগীরের মুখে হাসি
করোনার অতিমারিতে হয়ে কর্মহীন হয়ে নিদারুণ কষ্টে কাটানো আলমগীরের পাশে দাঁড়িয়েছেন রংপুর জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) বিপ্লব কুমার সরকার। তার রিকশা ভ্যান উপহার পেয়ে আলমগীর এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছেন নিজের পায়ে। রংপুর জেলার পী
করোনার অতিমারিতে হয়ে কর্মহীন হয়ে নিদারুণ কষ্টে কাটানো আলমগীরের পাশে দাঁড়িয়েছেন রংপুর জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) বিপ্লব কুমার সরকার। তার রিকশা ভ্যান উপহার পেয়ে আলমগীর এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছেন নিজের পায়ে।
রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার মিঠিপুর ইউনিয়নের রওশনপুর গ্রামের আলমগীর এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। এসপি বিপ্লবের নিকট থেকে রিক্সা উপহার পাওয়ায় তার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নুন আনতে পান্তা ফোরানো আলমগীরের। একটু আয় রোজগারের আশায় পাড়ি জমিয়েছিলেন রাজধানী ঢাকায়। সেখানে রিকশা চালিয়ে কোনো রকমে চলত তার জীবন। একদিন হঠাৎ শরীরে বাসা বাঁধে আলসারসহ নানা রোগ। তারপর ফিরে আসেন গ্রামে। জীবন। কষ্ট সইতে না পেরে সন্তানদের নিয়ে স্ত্রীও চলে যান বাপের বাড়ি।
জানা যায়, শারীরিক অসুস্থতা, দুমুঠো ভাতের ব্যবস্থা করতে না পারা, চিকিৎসা না চলায় নিজের মাথা গোঁজার ঠাঁই একমাত্র বসবাসের ঘরটি ১২ হাজার টাকায় বন্ধক দিয়ে দেন। সেই টাকা দিয়েই চলছিল চিকিৎসা। হঠাৎ টাকাও ফুরিয়ে যায়। থাকার ঘর বন্ধক, পরিবারে খাবার নেই। এমন কষ্ট সইতে না পেরে সন্তানদের নিয়ে স্ত্রীও চলে যান তার বাপের বাড়ি। আলমগীরও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়েও তেমন সাড়া পাননি।
পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে জানা যায়, এসপি বিপ্লব কুমার অসুস্থ আলমগীরের সব তথ্য জানার পর একটি রিকশা ভ্যান কেনা ও ব্যবসা করার জন্য তাকে কিছু নগদ টাকা। সেই ভ্যানে করে বিভিন্ন হাটবাজারে ব্যবসা করে তিনি এখন সংসারে শান্তি ফিরিয়েছেন। দৈনিক আয় দিয়ে তার ঘরের বন্ধক ছাড়িয়েছেন। যে অভাবের কারণে আলমগীর একদিন হারিয়েছিলেন সংসার-আপনজন, আজ সব ফিরে পেয়েছেন। আলমগীর এখন পরিশ্রম করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ব্যস্ত।
আলমগীরের মা মনোয়ারা বেগম ও বাবা সাহেব আলী জানান, চুক্তি অনুযায়ী ঘর বন্ধকের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। এখন তার ছেলের চিকিৎসা চলছে। পুলিশ সুপারের সহায়তা পেয়ে সংসারে হাসি ফিরেছে। ভ্যানে করে ফলমূল শাকসবজি বিক্রি করে যা আয় হয়, তা দিয়ে আলমগীরের সংসার চলছে।
আলমগীর হোসেন বলেন, এসপি স্যার আমার অনেক বড় উপকার করেছেন। আমাকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন ভ্যান ও ব্যবসা করার জন্য। তার পরামর্শে একটা ভ্যান কিনেছি। আর বাকি টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছি। এখন ভ্যানে করে হাটবাজারে ফলমূল বিক্রি করছি। বউ-বাচ্চা সবাইকে নিয়ে ভালো আছি। ঘর বন্ধকের টাকা পরিশোধ হয়েছে।
তিনি বলেন, অসুস্থতার কারণে ঢাকা থেকে বাড়িতে চলে এসেছিলাম। আমার আলসার রোগটি অনেক আগের অসুখ। মাঝেমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়ি, এখন ট্রিটমেন্ট নিয়ে আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।
রংপুর জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, একটু সহযোগিতা মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে, ফিরিয়ে আনতে পারে মুখের হাসি। দুঃখ-কষ্ট ভুলে এখন ভালো থাকার সংগ্রামে ব্যস্ত আলমগীর। তার মতো অসহায় মানুষদের পাশে সমাজের বিত্তবান ও সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মানবিক এই কর্মকর্তা।