নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হলেন শেখ আব্দুর রশিদ
নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে ড. শেখ আব্দুর রশিদকে আগামী দুই বছরের জন্য চুক্তি ভিত্তিত নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে ড. শেখ আব্দুর রশিদকে আগামী দুই বছরের জন্য চুক্তি ভিত্তিত নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন-২০১৮-এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী ড. শেখ আব্দুর রশিদকে অন্য যে কোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ড. শেখ আব্দুর রশিদকে আগামী ১৪ অক্টোবর যোগদান অথবা যোগদানের তারিখ হতে পরবর্তী ২ (দুই) বছর মেয়াদে এ পদে নিয়োগ প্রদান করা হলো।
এই নিয়োগের অন্যান্য শর্ত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
ড. শেখ আব্দুর রশীদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব হিসেবে গত ১৮ আগস্ট যোগদান করেন। সিভিল সার্ভিল (প্রশাসন) ক্যাডারের ১৯৮২ ব্যাচের এ কর্মকর্তা মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি সরকারের জাতীয় ও নীতি নির্ধারণী বিভিন্ন স্তরে ভূমিকা রেখেছেন।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ‘ইউএনও’, ফেনী জেলার, ‘অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক’ এবং টাঙ্গাইল জেলার ‘জেলা প্রশাসক’ হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালকের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
আব্দুর রশীদ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমি ও লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অনুষদ সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জননিরাপত্তা বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা বিভাগের উপসচিব, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়াও আব্দুর রশীদ পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ও জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
ড. শেখ আব্দুর রশীদ ১৯৫৭ সালের ৫ মে সাতক্ষীরা জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি নেদারল্যান্ডসের দি হেগ শহরে অবস্থিত ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল স্টাডিজ হতে পাবলিক পলিসি অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিষয়ে এম এ ডিগ্রি লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি ২০০৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে লোকপ্রশাসন বিষয়ে পিএইচডি লাভ করেন। ইতিপূর্বে তিনি এসএসসি ও এইচএসসিতে উভয় পরীক্ষার মেধা তালিকায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। তিনি বিসিএসের ১৯৮২ ব্যাচের সম্মিলিত মেধা তালিকায় ৪র্থ ও প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম স্থান অর্জন করেন।
পেশাগত উন্নয়নের লক্ষ্যে রশীদ এ পর্যন্ত বেশ কিছু বৈদেশিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক সার উন্নয়ন কেন্দ্র, ক্যালিফোর্নিয়ার মন্টেরিতে অবস্থিত ‘নেভাল পোস্টগ্রাজুয়েট স্কুল’ সুইডিশ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ স্টাফ কলেজ অব ইন্ডিয়া, কৃষি প্রকল্প পরিষেবা কেন্দ্র, কাঠমান্ডু উল্লেখযোগ্য।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত। তার সহধর্মিণী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা যিনি অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে অবসর নেন। রশীদের সন্তানরা দেশে ও বিদেশে অধ্যয়নরত।