সংখ্যালঘুদের জমি দখল ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এলজিইডি’র প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক (আইআরডিপি-বিজেপি এবং আইইউআইডিপি-২) কাজী মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অনৈতিক পন্থায় জোড়পূর্বকভাবে স্বল্পমূল্যে সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জমি দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই সাথে অনৈতিক পন্থায় বিপুল অর্থ ও সম্পদ অর্জনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সংখ্যালঘুদের জমি দখল ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এলজিইডি’র প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক (আইআরডিপি-বিজেপি এবং আইইউআইডিপি-২) কাজী মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অনৈতিক পন্থায় জোরপূর্বকভাবে স্বল্পমূল্যে সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জমি দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই সাথে অনৈতিক পন্থায় বিপুল অর্থ ও সম্পদ অর্জনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

প্রকৌশলী কাজী মিজানুর রহমানের এসব অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এ একটি লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রকৌশলী কাজী মিজানুর রহমানের বাবা ছিলেন একজন সামান্য মুদি দোকানের কর্মচারী। তাদের গ্রামের বাড়ি নড়াইল সদর উপজেলার সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের শোলপুর গ্রামে। খুবই নিম্ন আয়ের একটি পরিবারের সন্তান হয়েও বর্তমানে কাজী মিজানুর রহমান হঠাৎ করেই বিপুল সম্পদের মালিক হয়ে গেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের শোলপুর গ্রামের সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জমি জোরপূর্বকভাবে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বল্পমূল্যে দখল করেছেন। সেই সাথে সেই জমির মালিকদের জোর করে ভারতেও পাঠিয়ে দিয়েছেন।

অভিযোগে জানা যায়, প্রকৌশলী কাজী মিজানুর রহমান বর্তমানে নামে বেনামে বাড়ির জায়গা, মাঠের জায়গাসহ প্রায় শত কোটি টাকার মালিক।

শুধু তাই নয়, প্রকৌশলী কাজী মিজানুর রহমান তার অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ দিয়ে তার ভাই মাহবুব কাজীকে কাজে লাগিয়ে তাদের গ্রামের বাড়ির এলাকাতে মাদক, সন্ত্রাসসহ ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। ইতিমধ্যে মাহবুব কাজী এলাকায় খুন, মারামারিসহ একাধিক মামলায় জড়িত আছেন। কিন্তু প্রকৌশলী ভাইয়ের অর্থের জোরে তিনি (মাহবুব কাজী) এখনো বহাল তবিয়তে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

শোলপুর গ্রামের রবিন রায়, দিপালী দাস, আশীষ রায়, তরুন রায়, সৈন্য গোস্বামী, সুবর্ন বিশ্বাস, মনোরঞ্জন রায় (মিঠুন), সুকান্ত গোস্বামী, অন্ধ হিন্দু বিশ্বাস, সুধান গোস্বামী, পরিমল ফকির, মনোরঞ্জন ঠিকাদার, চিত্ত দাস, তরুন কোটাল, মনোজ বিশ্বাসসহ  আরও অনেকে তার কাছে জমি লিখে দিয়ে ভারতে পাড়ি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ সুত্রে জানা যায়।

প্রকৌশলী কাজী মিজানুর রহমানের কালো টাকার প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে তার ভাই মাহবুব কাজী এলাকার মানুষকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে স্বল্পমূল্যে তাদের বাড়ি ও জমি ক্রয় করছে। শুধু তাই নয়, বিত্তশালী প্রকৌশলী ভাইয়ের অর্থের প্রভাবে মাহবুব কাজী তাদের এলাকার নির্মল রায়কে হত্যা করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বাবু রাজু বিশ্বাস নামের আর এক ব্যক্তিকে মেরে পা ভেঙ্গে ফেলারও অভিযোগ রয়েছে এই মাহবুব কাজীর বিরুদ্ধে। সেই সাথে বিধান রায় নামে আর এক সংখ্যালঘু ব্যক্তির দোকানে ভাঙ্গচুর ও লুটপাটের অভিযোগও রয়েছে তার নামে। বর্তমানে মাহবুব কাজীর নামে মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সে অভিযোগপত্রে সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের শোলপুর গ্রামের স্থানীয় লোকদের দাবি, তাদের এলাকায় মাহবুব কাজীর যে সকল অনৈতিক কর্মকাণ্ড চলমান রয়েছে তার পেছনে প্রত্যক্ষ মদদ রয়েছে তার বিত্তশালী প্রকৌশলী ভাই কাজী মিজানুর রহমানের।

এসব অভিযোগের সত্যতার বিষয়ে জানতে প্রকৌশলী কাজী মিজানুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিবেদককে জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো সত্য নয়। একজন সরকারি কর্মকর্তার পদে চাকরি করে কিভাবে এতো বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, এসবই মিথ্যে কথা। তার ভাই মাহবুব কাজীর বিষয়ে এলাকাবাসীর নানা অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, শত্রুতার জেরে এসব করা হচ্ছে হয়তো।