হাওরে ধান কাটা শ্রমিকের কোনও সংকট নেই: কৃষিমন্ত্রী

দেশের হাওর অঞ্চলের ধান কাটার জন্য উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলা থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিক আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। তিনি বলেন, ‘গত বছর হাওরের ধান কাটার জন্য যেভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল, এ বছরও সেভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে হাওরে ধান কাটার জন্য শ্রমিকের কোনও সংকট নেই। একইসঙ্গে কম্বাইন হারভেস্টার, রিপারসহ পর্যাপ্ত ধান কাটার যন্ত্র হাওরে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’

হাওরে ধান কাটা শ্রমিকের কোনও সংকট নেই: কৃষিমন্ত্রী
ফাইল ছবি

দেশের হাওর অঞ্চলের ধান কাটার জন্য উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলা থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিক আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। তিনি বলেন, ‘গত বছর হাওরের ধান কাটার জন্য যেভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল, এ বছরও সেভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে হাওরে ধান কাটার জন্য শ্রমিকের কোনও সংকট নেই। একইসঙ্গে কম্বাইন হারভেস্টার, রিপারসহ পর্যাপ্ত ধান কাটার যন্ত্র হাওরে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’

কৃষিমন্ত্রী বৃহস্পতিবার অনলাইনে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এসব কথা বলেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। এ সময় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং সংস্থাপ্রধানসহ প্রকল্প পরিচালকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘অতীতের যেকোনও সময়ের চেয়ে এ বছর ধান চালের উৎপাদন বাড়াতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আমাদের চেষ্টার কোনও কমতি ছিল না। বেশি জমি চাষের আওতায় আনা, উন্নত জাতের ও হাইব্রিড জাতের ধান চাষে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। বীজ, সারসহ নানা প্রণোদনা কৃষদের দেওয়া হয়েছে। হাইব্রিড ধানের বীজ সহায়তা বাবদ ৭৬ কোটি টাকার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মীরা করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কঠোর পরিশ্রম করেছেন, কৃষকের পাশে থেকেছেন। নতুন উন্নত জাতের ধান চাষের জন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছেন তারা।’

তিনি বলেন, ‘এসব উদ্যোগের ফলে গত বছরের তুলনায় এ বছর এক লাখ ২০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। একইসঙ্গে, গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩ লাখ হেক্টরেরও বেশি জমিতে হাইব্রিডের আবাদ বেড়েছে। আশা করা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর বোরোতে ৯-১০ লাখ টন বেশি উৎপাদন হবে।’

কৃষিমন্ত্রী এ সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে ধান কাটায় এগিয়ে আসার এবং এ বিষয়ে যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, এ বছর সারাদেশে বোরোতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৮ লাখ ৫ হাজার ২০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে। এ বছর বোরোতে ২ কোটি ৫ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, এ বছর হাওরবেষ্টিত ৭টি জেলা—কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় বোরো আবাদ হয়েছে ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে শুধু হাওরে আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৫১ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে। ২১ এপ্রিল পর্যন্ত হাওরবেষ্টিত ৭টি জেলায় ২ লাখ ৩১ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ২৫ ভাগ। অন্যদিকে, শুধু হাওরের এক লাখ ৮০ হাজার ৭২৯ হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ৪০ ভাগ।

সভায় জানানো হয়, চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরের আরএডিপিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৮২টি প্রকল্পের অনুকূলে মোট ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। মার্চ ২০২১ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি হয়েছে ৪৯.১০%, যেখানে জাতীয় গড় অগ্রগতি ৪১.৯২%।