কাজের চাপে বোতলে প্রস্রাব আমাজন কর্মীদের!

কাজের চাপের কারণে ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামজনের অনেক কর্মীকে বোতলে প্রস্রাব করতে হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে সাবেক এক কর্মী বই লেখার পর প্রতিষ্ঠানটির অনেক কর্মী মুখ খুলছেন।

কাজের চাপে বোতলে প্রস্রাব আমাজন কর্মীদের!

কাজের চাপের কারণে ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামজনের অনেক কর্মীকে বোতলে প্রস্রাব করতে হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে সাবেক এক কর্মী বই লেখার পর প্রতিষ্ঠানটির অনেক কর্মী মুখ খুলছেন।

ওয়াশিংটন পোস্ট’র প্রতিবেদনে বলা হয়, আমাজন কর্মীদের বোতলে প্রস্রাব করা নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসের এক সদস্য টুইট করেন। এরপর বিতর্ক শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও পরে আমাজন স্বীকার করতে বাধ্য হয় যে, আমেরিকায় তাদের কোনো কোনো গাড়িরচালককে অবস্থা বিশেষে বোতলে প্রস্রাব করতে হয়।

ব্রিটিশ সাংবাদিক জেমস ব্লাডওয়ার্থ একটি বই লিখেছেন আমাজনের ওপর। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, তাকেও আমাজনে থাকার সময় বোতলে প্রস্রাব করতে হয়েছে। পরে টুইটারেও সেই দাবি করেন তিনি। ওই টুইট ঘিরে ব্যাপক আলোড়ন ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এরপর সেই অভিযোগের জবাব দেন আমাজনের হেড এক্সিকিউটিভ ডেভ ক্লার্ক। এমন অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দেন, ই-কমার্স এই সংস্থায় কাজের পরিবেশ অত্যন্ত প্রগতিশীল। পাশাপাশি আমাজন যে তার কর্মীদের প্রতি ঘণ্টার জন্য ১৫ ডলার পারিশ্রমিক দেয়, তাও মনে করিয়ে দেন তিনি।

এরপরই মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য মার্ক পোক্যান টুইট করে ক্লার্ককে কটাক্ষ করে লেখেন, ‘ঘণ্টায় ১৫ ডলার দেওয়ার মানে এই নয় যে, আপনাদের কাজের পরিবেশ প্রগতিশীল।’ তার দাবি, যে সংস্থায় কর্মীদের বোতলে প্রস্রাব করতে হয়, সেখানকার কাজের পরিবেশকে ভালো বলাই যায় না।

উত্তরে আমাজনের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে পোক্যানকে খোঁচা মেরে লেখা হয়, ‘আপনি সত্যিই বিশ্বাস করেন বোতলে প্রস্রাব করার ব্যাপারটা? যদি এটা সত্যি হত, কেউ আমাদের সঙ্গে কাজ করত না।’

তবে আমাজনের এই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা শেষ পর্যন্ত ধোপে টেকেনি। সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন সংস্থার বহু কর্মী। তারা জানান, উপায়ান্তর না দেখে বহু ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের বোতলকেই হালকা হওয়ার একমাত্র ‘অপশন’ হিসেবে বেছে নিতে হয়।

অনেক কর্মী বিষয়টি নিয়ে কথা বলার পর সুর পাল্টায় আমাজন। একটি বিবৃতি দিয়ে তারা ক্ষমা চায় মার্ক পোক্যানের কাছে। সরাসরি অভিযোগকে মেনে নিয়ে ই-কমার্স জায়ান্ট জবাব দেয়, ‘আমরা জানি আমাদের চালকদের অনেক সময়ই এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয়, যখন শৌচাগারই পাওয়া যায় না। বিশেষ করে ট্র্যাফিকে ফেঁসে গেলে কিংবা কখনো গ্রামীণ এলাকায় গেলে। বিশেষ করে কোভিড-১৯ সময় যখন বহু শৌচাগার বন্ধ রাখা হয়েছিল, তখন এটার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল।’

তবে এটা কেবল আমাজনের নয় বরং এই ইন্ডাস্ট্রির সমস্যা বলেও দাবি প্রতিষ্ঠানটির। সেই সঙ্গে তাদের আশ্বাস, ‘আমরা এটার সমাধান করতে চাই।’ যদিও তাদের বক্তব্যে খুশি হতে পারেননি পোক্যান। তিনি জবাব দেন, ‘বিষয়টা আমাকে নিয়ে নয়, আপনাদের কর্মীদের নিয়ে। তাদের সম্মান ও মর্যাদার ব্যাপার।’

প্রকৌশল নিউজ/এমএস