গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যসেবায় সেনাবাহিনী

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সেই সাথে তারা বাংলাদেশ সরকারের কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য সক্রিয়ভাবে মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় করোনা সংকট মোকাবেলায় সেনাবাহিনী এবার তাদের বিশেষ টিম নিয়ে গর্ভবতী মায়েদের পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন।

গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যসেবায় সেনাবাহিনী

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সেই সাথে তারা বাংলাদেশ সরকারের কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য সক্রিয়ভাবে মাঠে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় করোনা সংকট মোকাবেলায় সেনাবাহিনী এবার তাদের বিশেষ টিম নিয়ে গর্ভবতী মায়েদের পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের ৩০ ফিল্ড রেজিমেন্ট-এর উদ্যোগে বুধবার রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার শহীদ শেখ রাসেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গর্ভবতী মায়েদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও ঔষধ সামগ্রী প্রদান করা হয়।

জানা যায়, সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের অধীনস্ত ৩০ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি ও ৬১ ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্স এর ব্যবস্থাপনায় এ মেডিকেল ক্যাম্পেইন পরিচালিত হয়।

এ চিকিৎসা সেবার সময় সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের ৩০ ফিল্ড রেজিমেন্ট-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো: মোহসীন হাসান বলেন, রাজধানীর ঘনবসতি ও সুবিধাবঞ্চিত এলাকার মধ্যে হাজারীবাগ অন্যতম। এ এলাকার মানসম্মত সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের সংখ্যা খুব অপ্রতুল্য। বৈশ্বিক মহামারী করোনার জন্য বর্তমানে গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির বিষয়টি অত্যন্ত দুরহ হয়ে পড়েছে।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ. মহসীন হাসান আরো বলেন, বিশেষ করে হাজারীবাগ এলাকায় করোনার ঝুঁকি নিয়ে গর্ভবতী মায়েদের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। চলমান লকডাউন এর জন্য অনেক গর্ভবতী মায়েরা সঠিক স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত।

অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল বলেন, অপারেশন কোভিড শিল্ডের দ্বিতীয় ধাপে সেনা সদস্যদের দ্বারা সাধারণদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি কর্মকাণ্ড অব্যাহত আছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে না আসা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার গুরুত্ব সকলকে অবহিত করার পাশাপাশি বিভিন্ন চেক পয়েন্টে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করার কাজে সেনাসদস্যরা বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করছে। একই সাথে কঠোর হস্তে লকডাউন বাস্তবায়নে পাশাপাশি দারিদ্র্য ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার কাজ চলমান রেখেছে।

তিনি বলেন, বিগত দিনগুলিতে অসহায় ও দরিদ্র জনগণের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ এর পর এবার গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তারই ধারাবাহিকতায় আজ রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার শহীদ শেখ রাসেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সেনাবাহিনীর ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের অধীনস্ত ৩০ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি ও ৬১ ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্স এর ব্যবস্থাপনায় মেডিকেল ক্যাম্পেইন পরিচালিত হয়।

আর্টিলারির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো: মহসীন হাসান বলেন, উক্ত মেডিকেল ক্যাম্পেইনে এলাকার দুই শতাধিক গর্ভবতী মায়েদের বিনামূল্যে অভিজ্ঞ দক্ষ বিশেষজ্ঞ মহিলা ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ওষুধ বিতরণ করা হয়। 

অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল মহসীন হাসান আরো বলেন, এ মেডিকেল ক্যাম্পেইনে পরিচালনার সময় শুরুতেই সকল গর্ভবতী মা ও তাদের সঙ্গে আসা এটেনডেন্সদের সকলকে মাক্স প্রদান করা হয় ও করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি মাথায় রেখে তাদের ক্যাম্পেইনের স্থানে প্রবেশের পর হতে শুরু করে অপেক্ষামান রোগীদের জন্য নির্ধারিত স্থানে ওষুধ বিতরণের স্থানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসার জন্য স্থান নির্ধারণ করে তোলা হয়েছে। রাজধানীর অন্যতম দরিদ্র এই থানার এ ধরনের সেবা পেয়ে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ উপকৃত।

মহসীন হাসান বলেন, অতীতের মতো ভবিষ্যতে দেশে ও জাতির প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর পক্ষ হতে এই ধরনের মানবিক কার্যক্রম চলমান থাকবে স্থানীয়দের মধ্যে সেনাবাহিনী এই মানবিক উদ্যোগের ভূয়াসী প্রশংসা পেয়েছে।

সেনাবাহিনী তথ্য মতে, গর্ভবতী মায়েদের জন্য অপরিহার্য কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী উপহার স্বরুপ ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম ইমরান হামিদ ও ৩০ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মহাসীন হাসান কর্তৃক প্রদান করা হয়। 

উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ৬১ ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্সের অধিনায়ক লেফটন্যান্ট কর্নেল রেজা, মেজর ইমতিয়াজ, মেজর মাজহার, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইলিয়াস, সিটি করপোরেশন এর স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ড: সাদাত সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস