লকডাউনের প্রতিবাদে নিউ মার্কেটে গাড়ি ভাংচুর, পুলিশকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ

লকডাউন ঘোষণার প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীরা। রোববার দুপুরের পর রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেনব্যবসায়ীরা। লকডাউন মানি না বলে শ্লোগান দেন তারা।

লকডাউনের প্রতিবাদে নিউ মার্কেটে গাড়ি ভাংচুর, পুলিশকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ

লকডাউন ঘোষণার প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীরা। রোববার দুপুরের পর রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেনব্যবসায়ীরা। লকডাউন মানি না বলে শ্লোগান দেন তারা।

এসময় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিলের ফলে ধানমন্ডির এলাকার মিরপুর সড়কে বেশ দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

এসময় বিক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে, পুলিশ পিছু হটে ঢাকা কলেজের সামনে অবস্থান নেয়। আন্দোলনরত ব্যবসায়ীরা রাস্তায় বেশকিছু বাস ও প্রাইভেট গাড়ি ভাঙচুর করে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের নিউ মার্কেট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়াসিন আলী গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা প্রাথমিক অবস্থায় তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। মার্কেটের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এদিকে আগামীকাল সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের নির্দেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন এবং সমন্বয় অধিশাখা থেকে। রোববার জারি করা এই প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ শাফায়াত মাহবুব চৌধুরী।

৫ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত নির্দেশনা অনুযায়ী চলাচল করতে হবে। নির্দেশনাগুলো হলো-

১. সব ধরনের গণপরিবহন (সড়ক, নৌ, রেল ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট) বন্ধ থাকবে। তবে, পণ্য পরিবহন, উৎপাদন ব্যবস্থা, জরুরি সেবাদানের ক্ষেত্রে এই আদেশ প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া, বিদেশগামী/বিদেশ প্রত্যাগত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।

২. আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন-ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্র) কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবাসহ অন্যান্য জরুরি ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ, তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।

৩. সব সরকারি/আধা-সরকারি/স্বায়ত্তশাসিত অফিস ও আদালত এবং বেসরকারি অফিস কেবল জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সীমিত পরিসরে প্রয়োজনীয় জনবলকে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা-নেওয়া করতে পারবে। শিল্প-কারখানা ও নির্মাণ কার্যাদি চালু থাকবে। শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া করতে হবে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ কর্তৃক শিল্প-কারখানা এলাকায় নিকটবর্তী সুবিধাজনক স্থানে তাদের শ্রমিকদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল/চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

৪. সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয়/সরবরাহ করা যাবে। কোনও অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার গ্রহণ করা যাবে না।

৫. শপিংমলসহ অন্যান্য দোকানগুলো বন্ধ থাকবে। তবে দোকানসমূহ পাইকারি ও খুচরা পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বাবস্থায় কর্মচারীদের মধ্যে আবশ্যিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কোনও ক্রেতা সশরীরে যেতে পারবে না।

৬. কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

৭. ব্যাংকিং ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।

৮. সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ঢাকায় সুবিধাজনক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

৯. সারাদেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসন উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে।

১০. এই আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।