ইয়াবাসহ আটক সেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে ছেড়ে মামলায় পলাতক আসামি
কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারীতে ২শ পিস ইয়াবাসহ আটকের ৩০ ঘন্টা পর সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক মন্ডলকে ছেড়ে দিয়ে দিয়েছে ডিবি পুলিশ। মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ের অভিযোগ এখন মুখ মুখে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো কথিত সেচ্ছাসেবক লীগ নেতার দীর্ঘদিনের প্রতিপক্ষ ২ জনকে আসামি করে ডিবি পুলিশ তড়িঘড়ি করে একটি মামলা দায়ের করেছে ভুরুঙ্গামারী থানায়। এ ঘটনা জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়, চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারীতে ২শ পিস ইয়াবাসহ আটকের ৩০ ঘন্টা পর সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক মন্ডলকে ছেড়ে দিয়ে দিয়েছে ডিবি পুলিশ। মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ের অভিযোগ এখন মুখ মুখে। ঘটনা ধামাচাপা দিতে উল্টো কথিত সেচ্ছাসেবক লীগ নেতার দীর্ঘদিনের প্রতিপক্ষ ২ জনকে আসামি করে ডিবি পুলিশ তড়িঘড়ি করে একটি মামলা দায়ের করেছে ভুরুঙ্গামারী থানায়। এ ঘটনা জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়, চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
জানা যায়, ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর বাজার থেকে ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল নামের সাবেক এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে আটক করে ডিবি পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সোনাহাট বাজারে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক মন্ডলকে সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশ চ্যালেঞ্জ করলে সে মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। পরে তাকে আটক করা হয়। এসময় মোটর সাইকেলে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা ২০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে রাজ্জাককে ঘটনাস্থল থেকে কুড়িগ্রাম ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুড়িগ্রাম ডিবি পুলিশের দল সোনাহাট বাজারে ওৎ পেতে থাকে। এ সময় রাজ্জাক বিশেষ কায়দায় মোটর সাইকেলে ইয়াবা নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে থামতে বললে সে মোটর সাইকেল ফেলে পালাতে চেষ্টা করে। ওৎ পেতে পুলিশ টীম তাকে দৌড়ে আটক করে। পরে মোটর সাইকেলে রাখা ২০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এদিকে আব্দুর রাজ্জাক মন্ডলকে ইয়াবাসহ আটক করে নিয়ে যাবার পর এ ব্যাপারে ডিবির পক্ষ থেকে কোন তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। আব্দুর রাজ্জাক মন্ডলকে আটকের পর ৩০ ঘন্টা সাংবাদিকদের ফোনকলও রিসিভ করেননি। তবে পরদিন সোমবার (০৬.০৯.২১ইং) তারিখে রাতে তাকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিবি পুলিশ। এদিকে তড়িঘড়ি করে সোমবার রাতেই ডিবির এসআই মোস্তফা বাদি হয়ে মিজানুর রহমান মিজু এবং রাজু আহমেদকে আসামি করে ভুরুঙ্গামারী থানায় মাদক আইনে একটি মামলা দায়ের করে, যার মামলা নং-০২। অন্যদিকে, ঘটনাস্থল থেকে আলামতসহ আটক ব্যাক্তিকে থানায় হস্তান্তর না করে ৩০ ঘন্টা পর আটককৃতকে ছেড়ে দিয়ে ওই মামলায় অন্য ২ ব্যক্তিকে মাদক আইনে মামলা দিয়ে আসামি করায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
ভুরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, আলোচিত এই মামলা ডিবি পুলিশ তদন্ত করবে। আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল সোনাহাট ইউরনয়নের বানুর কুঠি গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের পুত্র। সে এই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি। তার মোটর সাইকেল থেকে ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইয়াবা উদ্ধার করে। পরে তদন্তের সার্থে রাজ্জাককে ডিবি অফিসে নেওয়া হয়। পরে সোমবার রাতে অন্য দুজন আসামির নাম উল্লেখ করে মাদক মামলা দিয়েছে ডিবি পুলিশ।
এ ব্যাপারে ডিবি'র ওসি আতিকুর রহমান জানান, আব্দুর রাজ্জাককে ঝামেলায় ফেলতে পূর্ব পরিকল্পনা করে তাকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে বলে আমরা তদন্তে জানতে পেরেছি। পরে সোমবার রাতে মিজানুর রহমান মিজু এবং রাজুর সংশ্লিষ্টতা পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা রুজু করে রাজ্জাককে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মিজানুর রহমান মিজু, রাজু মন্ডল এবং আলোচিত ঘটনার নায়ক আব্দুর রাজ্জাক মন্ডলের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। রহস্যজনকভাবে তারা কেউ বাড়িতেও থাকছেন না।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রুহুল আমিন ইয়াবাসহ আটকের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, তদন্তের কারণে আব্দুর রাজ্জাক মন্ডলকে ছেড়ে দিতে বিলম্ব হয়েছে। ডিবি পুলিশ কতৃক ২ জনকে আসামি করে মামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে, তিনি তদন্তের স্বার্থে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
প্রকৌশলনিউজ/সু