পলাশবাড়ীতে প্রেসক্লাব জ্বালিয়ে দেওয়া হুমকি!

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী প্রেসক্লাব আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতির ছেলে তৌফিক আহম্মেদ শাওন। ঘটনার পর সেখানকার সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হুমকি প্রদানকারী শাওনের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করেন।

পলাশবাড়ীতে প্রেসক্লাব জ্বালিয়ে দেওয়া হুমকি!

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী প্রেসক্লাব আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতির ছেলে তৌফিক আহম্মেদ শাওন। ঘটনার পর সেখানকার সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হুমকি প্রদানকারী শাওনের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ উপ নির্বাচনে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী সাদুল্লাপুর আসনে নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ কৃষকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ উম্মে কুলসুম স্মৃতি। তিনি সেখানকার  ৪টি সংগঠনের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে সকল সদস্যকে মুলধারার প্রেসক্লাবে অন্তভূক্ত করেন। যেখানে ৭১ জন সাংবাদিক নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করে গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে রবিউল হোসেন পাতা সভাপতি ও সিরাজুল ইসলাম রতন সাধারণ সম্পাদকসহ ২৭ সদস্য কার্যনির্বাহী কমিটিতে নির্বাচিত হয়।

নবনির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব গ্রহনের পর অপসাংবাদিক ছাটাই করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

গত ফেব্রুয়ারী মাসে উপজেলা আওয়ামিলীগ সহ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ এবং উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ শামিকুল ইসলাম সরকার লিপনসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে অব্যাহতি দেয়া হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু বক্কর প্রধান, সহ সভাপতি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব একেএম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ ও সাধারণ সম্পাদক  উপাধ্যক্ষ শামিকুল ইসলাম সরকার লিপন সাংবাদিকদের ঐক্য বিনষ্ট করতে নিজেদেরকে সাংবাদিক দাবী করে ২/৩ জন সাংবাদিককে সাথে নিয়ে আরেকটি প্রেসক্লাবের সাইনবোর্ড উত্তোলন করে। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মাঝে মতবিরোধ তৈরী হয়।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামিলীগ সভাপতি আবু বকর প্রধান এর ছেলে তৌফিক আহম্মেদ শাওন গতকাল শনিবার সন্ধা ৭ টায় তার বন্ধুদের সাথে নিয়ে প্রেসক্লাবে হামলা চালায়। এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রেসক্লাব থেকে বের হতে বলে প্রেসক্লাব আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার  হুমকি ধামকি দেন।

এদিকে শাওনের এহেন আচরনের প্রতিবাদে রোববার বাদ মাগরিব পলাশবাড়ী প্রেসক্লাবে এক জরুরি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সাংবাদিক নেতারা উক্ত ঘটনার তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হুমকি প্রদানকারী শাওনের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবী করেন।

জানা গেছে, ১৯৮২ ইং সালে প্রতিষ্ঠিত হয় পলাশবাড়ী প্রেসক্লাব। যার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাপ্তাহিক অনড় পত্রিকার সম্পাদক শাহ আলম সরকার ও সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন পাতা। প্রতিষ্ঠার পর একতলা বিশিষ্ট নিজস্ব একটি ভবনে প্রেসক্লাবের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এক সময় ১২/১৩ জন সাংবাদিক এই প্রেসক্লাবে থাকলেও বর্তমানে রয়েছে ৭১ জন সদস্য। ১৯৯৪ সালে রিপোর্টার ইউনিটি নামে একটি সাইনবোর্ড তুলে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা আদায় করে সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ। 

পরবর্তীতে ২০১২ সালে প্রেসক্লাব পলাশবাড়ী নামে আরো একটি সংগঠনের জম্ন হয় যার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন মনজুর কাদির মুকুল ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রতন। ২০১৮ সালে ৩য় প্রেসক্লাব চৌমাথা মোড় পলাশবাড়ী নামে আরো একটি প্রেসক্লাব প্রতিষ্টিত হয় যার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন রফিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদার রহমান মাসুদ।

তিনটি প্রেসক্লাব ও একটি রিপোর্টার ইউনিটি মোট ৪ টি সংগঠনের সাংবাদিকদের মাঝে ঐক্য না থাকায় প্রশাসনিক দপ্তরসহ সাধারণ মানুষ বিব্রতকর অবস্থায় পরে যায়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার চেষ্টা করেও ঐক্যবদ্ধের ব্যাপারে ফলপ্রসূ আলোচনা না হওয়ায় প্রশাসনের উদ্যোগ বারবার ভেস্তে যায়।