রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকার উপায় খুঁজছে কমনওয়েলথ
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য গাম্বিয়া গতবছরের নভেম্বর মাসে ওআইসি, কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের সহায়তায় আইসিজে-তে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করে। সেই মামলায় কমনওয়েলথ দেশটিকে সাহায্যর উপায় খুঁজছে।
সংস্থাটির সেক্রেটারি জেনারেল প্যাট্রিশিয়া স্কটল্যান্ড বলেছেন, তার সংস্থা রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার আইনি লড়াইয়ে গাম্বিয়াকে সহায়তা দেওয়ার উপায় খুঁজছে এবং কমনওয়েলথ বাংলাদেশের পাশে থাকবে কারণ, তারা বিশ্বের সর্বাধিক সংখ্যক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠিকে আশ্রয় দিয়েছে।
লন্ডনে তার অফিস থেকে বাসস-এর সাথে এক একান্ত ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, কমনওয়েলথ সচিবালয় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় আইনি লড়াইয়ে গাম্বিয়াকে সহায়তার জন্য সংস্থার সদস্য দেশগুলো থেকে আইনজীবীদের একটি বড় টিম গঠনের সম্ভাবনা পর্যালোচনা করে দেখছে।
স্কটল্যান্ড বলেন, কমনওয়েলথের সদস্য কানাডা আইসিজে-তে আইনি লড়াইয়ে গাম্বিয়ার সাথে হাত মিলিয়েছে। আর এক্ষেত্রে তার অফিস কমনওয়েলথে বিদ্যমান আইনবিদদের দিয়ে এই পদক্ষেপে সহায়তার পরিকল্পনা করেছে।
তিনি বলেন, “(একই সাথে) কমনওয়েলথ পরিবার এই ইস্যুতে বাংলাদেশের সাথে ‘পূর্ণ সংহতি’ নিয়ে দাঁড়িয়েছে এবং ২০১৩ সালে কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে যাবে।”
কমনওয়েলথের শীর্ষ নির্বাহী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
গত সপ্তাহে লন্ডনে কমনওয়েলথ সচিবালয় এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনের যৌথ উদ্যোগে একটি উচ্চ পর্যায়ের সংলাপের পরে স্কটল্যান্ডের এই মন্তব্য এসেছে।
মিয়ানমার ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট এক নির্মম সামরিক অভিযান শুরু করার পর দেশটির রাখাইন রাজ্যের ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা তাদের জন্মভূমি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়, যাদের বেশিরভাগ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় নেয়।
গাম্বিয়া গতবছরের নভেম্বর মাসে ওআইসি, কানাডা ও নেদারল্যান্ডসের সহায়তায় আইসিজে-তে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করে। গতবছরের ১০-১২ ডিসেম্বর আইসিজে তার প্রথম শুনানি করে।
গত ২৩ জানুয়ারি আইসিজে ঐতিহাসিক সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহন করে এবং রুল দেয় যে এই মামলা চালানোর যথেষ্ট কারণ রয়েছে এবং মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ সুরাহা করে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে।
উল্লেখ্য, জাতীয়তায় ডোমিনিকান প্যাট্রিশিয়া স্কটল্যান্ড হচ্ছেন ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ থেকে আসা কমনওয়েলথের দ্বিতীয় মহাসচিব ও প্রথম নারী।