দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে মেরিন গ্রাজুয়েটদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সততা, দক্ষতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে মেরিন গ্রাজুয়েটদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সততা, দক্ষতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে মেরিন গ্রাজুয়েটদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ক্যাডেটরা আজ নতুন জীবনে পদার্পণ করবেন, সততা, দক্ষতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। যাতে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়। মনে রাখতে হবে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছি।’
শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রামস্থ বাংলাদেশ মেরিন একডেমিতে ৫৫ ব্যাচের ক্যাডেটদের মুজিবর্ষ গ্রাজুয়েশন প্যারেডে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী পাসিং আউট ক্যাডেটদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘সমুদ্রচারণ বিষয়টা বেশ চ্যালেঞ্জিং, খুব কঠিন একটা দায়িত্ব। কিন্তু দায়িত্বটা পালন করার মত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে তোমরা কর্মক্ষেত্রে যোগ দেবে।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা হাতেগড়া এই প্রতিষ্ঠানটি প্রায় মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁর সরকার পেয়েছিল। কাজেই তা উন্নত করবার জন্য ব্যাপক কর্মসূচিও তাঁর সরকার বাস্তবায়ন করেছে। বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি’-সরকারি ৫টি ও বেসরকারি ৬টিসহ সমুদ্র-বিশ্বের চাহিদা অনুযায়ী, আমরা আরও চারটি মেরিন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছি। যা এবছরেই চালু হচ্ছে।’
তিনি বলেন, তাঁর সরকার জাহাজ চলাচলে উচ্চতর শিক্ষার প্রবর্তনের জন্য ২০১৩ সালে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি’ প্রতিষ্ঠা করেছে। দায়িত্ব গ্রহনের পর ছেলে-মেয়েদের জন্য শিক্ষার বিভিন্ন সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর আওতায়, তোমাদের বিদ্যমান তিন বছর মেয়াদী ব্যাচেলর অব মেরিটাইম সাইন্স পাস ডিগ্রি কোর্সকে, চার বছর মেয়াদী অনার্স কোর্সে উন্নীত করা হয়েছে। পাশাপাশি, প্রবর্তন করা হয়েছে ‘মাস্টার অব মেরিটাইম সায়েন্স’ ডিগ্রী কোর্স। শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে সর্বোচ্চ শিক্ষাটা গ্রহণ করা দরকার, সেভাবেই প্রশিক্ষিতও হবে হবে। তাই, সে সুযোগটা আমরা সৃষ্টি করে দিচ্ছি।’
বিগত ১০ বছরে এই একাডেমির শিক্ষাদান ট্র্যাডিশনাল থেকে ডিজিটালে রূপান্তরিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্য মার্চেন্ট নেভি ট্রেনিং বোর্ডের স্বীকৃতিসহ অর্জিত হয়েছে নানাবিধ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
তিনি বলেন, ‘একাডেমির নটিক্যাল প্রশিক্ষণকে উন্নততর করার লক্ষ্যে, ২০১৯ সনে একাডেমিতে স্থাপন করা হয়েছে ‘নেভিগেশন সিমুলেটর’। পাশাপাশি, এবছরই উন্নততর মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রশিক্ষণের স্বার্থে চলমান রয়েছে ‘ইঞ্জিন কন্ট্রোল সিমুলেটর’ স্থাপনের প্রক্রিয়া। অর্থাৎ এই একাডেমিকে পুর্ণাঙ্গ রূপ আমরা দিতে যাচ্ছি যাতে আমাদের ক্যাডেটরা দেশে এবং বিদেশে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ নিয়ে তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী ৫৫ ব্যাচের ক্যাডেটদের মনমুগ্ধকর কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন। অনুষ্ঠান থেকে তাঁকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানানো হয়। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মেসবাহ উদ্দিন চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী অনুষ্ঠানে পাসিং আউট ক্যাডেটদের মাঝে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণ পদক এবং বাংলাদেশ শিপিং করের্পারেশন পদক প্রদান করেন।
চিফ ক্যাডেট ক্যাপ্টেন আবির মোহাম্মদ সালমান নূর সার্বিক বিবেচনায় সফল চৌকষ ক্যাডেট হিসবে রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক লাভ করেন। অনুষ্ঠানে ক্যাডেটদের শপথ বাক্য পাঠ করান প্রতিষ্ঠানের কমান্ড্যান্ট মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ড. সাজ্জাদ হুসেইন।
এবারের ৫৫ ব্যাচে ১৯২জনসহ এই মেরিন একাডেমি থেকে এ পর্যন্ত পাসিং আউট ক্যাডেটের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ হাজারে দাঁড়িয়েছে। সূত্র : বাসস
প্রকৌশল নিউজ/এস