বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসার অপেক্ষায় শতভাগ জনগোষ্ঠী

সরকারের ঘোষিত ২০২১ সালের মধ্যে দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠীকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার উদ্যোগ বাস্তবায়নের পথে। গত মাসে দেশে বিদ্যুৎ সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে (নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ) ৯৯ শতাংশ। গত নভেম্বরে এ হার ছিল ৯৮ শতাংশ। লক্ষ্য বাস্তবায়নে কিঞ্চিত দূরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ।

বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসার অপেক্ষায় শতভাগ জনগোষ্ঠী
ফাইল ছবি

সরকারের ঘোষিত ২০২১ সালের মধ্যে দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠীকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনার উদ্যোগ বাস্তবায়নের পথে। গত মাসে দেশে বিদ্যুৎ সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে (নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ) ৯৯ শতাংশ। গত নভেম্বরে এ হার ছিল ৯৮ শতাংশ। লক্ষ্য বাস্তবায়নে কিঞ্চিত দূরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ।

সম্প্রতি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি দেশে বিদ্যুৎ গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন কোটি ৯৪ লাখ। গত নভেম্বরে এ সংখ্যা ছিল তিন কোটি ৮৭ লাখ। আর ২০০৯ সালের শুরুতে আওয়ামী লীগ সরকারের দায়িত্ব গ্রহণকালে বিদ্যুৎ সুবিধাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর হার ছিল মাত্র ৪২ শতাংশ। আর গ্রাহকসংখ্যা ছিল এক কোটি আট লাখ। অর্থাৎ এক যুগে দেশে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে দুই কোটি ৮৬ লাখ গ্রাহক তথা ৫২ শতাংশ জনগোষ্ঠী।

প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বিদ্যুৎ সুবিধাভোগীর পাশাপাশি মাথাপিছু বিদ্যুৎ ব্যবহার দ্বিগুণ ছাড়িয়ে গেছে। যেখানে ২০১৯-২০ অর্থবছর দেশে মাথাপিছু বিদ্যুৎ ব্যবহারের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫১২ কিলোওয়াট ঘণ্টা। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল মাত্র ২২০ কিলোওয়াট ঘণ্টা। এছাড়া আবাসিকের পাশাপাশি এক যুগের ব্যবধানে দেশে সেচ গ্রাহক বেড়েছে দুই লাখ ১২ হাজার। ২০০৯ সালের শুরুতে এ খাতে গ্রাহক ছিল দুই লাখ ৩৪ হাজার। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৪৬ হাজার।

এদিকে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে দেশে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ছিল চার হাজার ১৩০ মেগাওয়াট। বর্তমানে তা গত মাস শেষে দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ৩৯৫ মেগাওয়াট। তবে ক্যাপটিভ দুই হাজার ৮০০ ও অফ-গ্রিড নবায়নযোগ্য উৎস ৩৯৯ মেগাওয়াট যোগ করলে দেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৫৯৪ মেগাওয়াট।

সূত্র জানায়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সারাদেশকে শতভাগ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠিতে শতভাগ বিদ্যুতায়ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের কোনো পর্যবেক্ষণ বা পরামর্শ থাকলে, তা অবহিত করার অনুরোধ জানানো হয়। বলা হয়, “আপনার নির্বাচনী এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো পর্যবেক্ষণ বা পরামর্শ থাকলে তা যথা শিগগির জানানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকলে অচিরেই ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ সে স্লোগানের সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।”

সরকারের পক্ষ থেকে দেশের শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে দ্রুত কাজ করে যাচ্ছে। সরকার চায় লক্ষ্য মাত্রার সময়ের আগেই তা পূরণ করতে। বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব(পরিকল্পনা) মোঃ নূরুল আলম  প্রকৌশলনিউজডটকমকে বলেন, ‘হবে।’ তবে, একটু চ্যালেঞ্জ আছে, যে জায়গাগুলো বাকি আছে সেগুলো সাধারণত চরাঞ্চল, পার্বত্য অঞ্চল। এই জায়গাগুলোতে আমাদের প্রজেক্ট চলছে আবার ইডকলের মাধ্যমেও করা হচ্ছে। এছাড়া আমরা হাতিয়া নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়ায় এসব এলার জন্য আমাদের আলাদা আলাদা প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ছোট ছোট জেনারেটরের মাধ্যেমে আমরা বাকী জায়গাগুলোতে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দিব।   

এছাড়া, বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) শেখ ফয়েজুল আমীন প্রকৌশলনিউজডটকমকে বলেন, শতভাগ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে আমাদের হাতে সময় আছে, সেহেতু আমরা আগামী ১৬ ডিসেম্বরের আগেই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছে যাব বলে আশা করছি।