সরকার আর কত ভর্তুকি দেবে, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর
জ্বালানিতেল, বিদ্যুৎ, সারসহ বিভিন্ন খাত মিলিয়ে সরকারকে প্রতি বছর ৫৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়, এমন তথ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন করেছেন, সরকার আর কত টাকা ভর্তুকি দেবে?
জ্বালানিতেল, বিদ্যুৎ, সারসহ বিভিন্ন খাত মিলিয়ে সরকারকে প্রতি বছর ৫৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়, এমন তথ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন করেছেন, সরকার আর কত টাকা ভর্তুকি দেবে?
বুধবার (১৭ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। তিনি আরও বলেছেন, বাজেটের সব টাকা যদি ভর্তুকিতে দিয়ে দেই তাহলে সব উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে।
যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে সদ্যসমাপ্ত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দেশে সম্প্রতি জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর বিভিন্ন খাতে এর প্রভাব নিয়ে করা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা করোনাকালে কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে সচল থাকে তার ব্যবস্থা নিয়েছি এবং জনগণকে বারবার সহায়তা দিয়েছি। মূল্যস্ফীতি কমাতে ব্যবস্থা নিয়েছি। বিভিন্ন সেক্টরে প্রণোদনা দিয়েছি। সবই তো করছি। কিন্তু জ্বালানিতেল তো আমাদের কিনে আনতে হয়। সেই কেনা তেলে আবার ভর্তুকি দিয়ে জনগণকে দিতে হয়।
প্রধানমন্ত্রী ট্যাক্স দেওয়া নিয়ে বলেন, দেশের মানুষ তো ভালোভাবে খাচ্ছে, চলছে। কিন্তু প্রকৃত ট্যাক্স দিচ্ছে কয়জন? বাস ও অন্যান্য পরিবহনের ভাড়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি দেশে ছিলাম না ঠিক, তবে দেশের সঙ্গে ছিলাম না তা তো নয়। ডিজিটাল যুগ। বিভিন্ন মাধ্যমে বারবার যোগাযোগ হয়েছে। যারা ভাড়া বাড়াচ্ছিল তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এরপর একটি যৌক্তিক পর্যায়ে ভাড়া রাখা হয়েছে।
খাদ্যের জন্য দেশের মানুষের যেন কষ্ট না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের খাদ্যের যাতে কষ্ট না হয়, সেদিকে আমাদের বিশেষভাবে নজর আছে। আমরা তো বিনা পয়সায় খাদ্য দিচ্ছি, বিনা পয়সায় মানুষকে সাহায্য করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাকালীন আমরা কিন্তু গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত কৃষক, শ্রমিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, মোয়াজ্জিন থেকে শুরু করে কোনো শ্রেণিপেশার মানুষ নাই, যাকে আমরা নগদ অর্থ দিয়ে সহায়তা না করেছি। একবার নয়, বারবার।
তিনি আরও বলেন, জিনিসপত্রের দাম যাতে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে না থাকে, তার ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি। উৎপাদন বাড়াবার সব রকম ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী ৩১ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত গ্লাসগো, লন্ডন ও প্যারিসে সরকারি সফরকালে কপ২৬ এ বিশ্ব নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন ২০২১, ইউনেস্কো সদর দপ্তরে সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান, ইউনেস্কোর ৪১তম সাধারণ সম্মেলন, প্যারিস শান্তি ফোরাম, ইউনেস্কোর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং অন্যান্য উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী ৩১ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সফরের অভিজ্ঞতা জানাতে গণভবন থেকে এই ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রায় দুই সপ্তাহের সফর শেষে ১৪ নভেম্বর দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।