বিচ্ছেদ হওয়ার পরেও এক সঙ্গে থেকেছেন মাহি-অপু
দুই বছর আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার পরও ঢালিউড তারকা মাহিয়া মাহি ও পারভেজ মাহমুদ অপু একসঙ্গে থেকেছেন, ঘুরেতে গেছেন। এজন্যই সাধারণ ভক্ত ও অনুসারীরা বিচ্ছেদের বিষয়টি বুঝতে পারেনি বলে জানিয়েছেন মাহি নিজেই।
সোমবার দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার সঙ্গে মাহি কথা বলেন। তখনই তিনি এ তথ্য জানান। তবে এর আগে গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সংসার ভাঙ্গার খবর দিয়েছিলেন। তবে তিনি ডিভোর্স হয়েছে কিনা বা কবে হবে সে বিষয়ে কিছুই জানাননি।
আজ বিচ্ছেদ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন। বর্তমানে মাহি নানাবাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে রয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রায় দুই বছর আগে আমাদের বিচ্ছেদ হয়েছে। কিন্তু ব্যাপারটা দুই পরিবার ছাড়া কেউ জানত না। বলতে পারেন, সবাইকে জানানোটা হঠাৎ করেই। জানানোর কারণও আছে। বিচ্ছেদের পরও গত দুই বছর আমরা দুজন বিভিন্ন জায়গায় একসঙ্গে ঘুরেছি, আড্ডা দিয়েছি। সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে। এসব দেখে মানুষ আসল ঘটনাটা জানতে পারেনি। এই ছবি দেখে সবাই ভাবেন, আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা নেই। মানুষ আমাকে প্রায়ই জিজ্ঞাসা করে, আমি ঢাকায় না কি শ্বশুরবাড়ি সিলেটে। এটা শুনতে নিজের কাছেই পেইন লাগে, অস্বস্তি লাগে। আমার মনে হয়, অপুকে আরও বেশি অস্বস্তিতে পড়তে হয়। কারণ, মানুষ তো জানেন না আমাদের বিচ্ছেদ আগেই হয়ে গেছে। আমার মনে হয়েছে বিষয়টি সবার জানা উচিত। অপুর জন্যই সেটা বেশি দরকার। কারণ, বিষয়টি পরিষ্কার না হলে সে তো এগোতে পারবে না। আমি হয়তো আমার মতোই থেকে যাব। নিজের মতো করে মানিয়ে নিতে পারব। আমি অপুর পরিবারকে বেশি ভালোবাসি। তাই মানবিক কারণেই বিষয়টি পরিষ্কার করে দিলাম।
মনে হয়েছিল এই সময়টার মধ্যে সব জাগতিক ঝামেলাগুলো কাটিয়ে উঠতে পারব। কিন্তু পারিনি। অপু আমাকে খুব ভালোবাসে। সে বেশি করে চাইত সর্ম্পকটা ধরে রাখতে। সেই ভালোবাসা থেকেই অপু চেয়েছিল ঘটনাটি প্রকাশ না করার জন্য। সে ভেবেছিল, হয়তো একটা সময় সব ঠিক হয়ে যাবে। তাঁর কারণেই এত দিন ঘটনাটি কাউকে জানাইনি। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে মনে হচ্ছিল, বিষয়টি গোপন রেখে অপুর ক্ষতি করে যাচ্ছি। আমার কোনো রাইট নেই তাঁর ক্ষতি করার। আসলে এত দিন ধরে জানানো, না জানানোর দ্বিধাদ্বন্দ্ব থেকে বের হতে চেয়েছি আমি। সবাই আপসেট। আমার শ্বশুরবাড়ি থেকে সবাই ফোন করেছিলেন। আমি ভয়ে ফোন ধরিনি। বিষয়টি নিয়ে আমার মা–ও খুব আপসেট।
‘অপু চেষ্টা করেছে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে’ জানিয়ে মাহি বলেন, ‘সে কখনই চায়নি আমাদের সম্পর্কটা শেষ হয়ে যাক। অপু প্রচণ্ড আড্ডাবাজ, ফুর্তিবাজ একটি ছেলে। বড় কথা হচ্ছে, ভালো মনের ছেলে সে। এ কারণেই অপুকে আমার পছন্দ। শুধু তা–ই নয়, অপুর মা–বাবা ও পরিবারের লোকজন আমার খুবই প্রিয়। তাঁদের সামাজিক মর্যাদাও আমার চেয়ে বেশি। আমার মনে হয়, অপুর মতো ভালো ছেলে আমার জীবনে আর আসবে না। সে এখনো একসঙ্গে থাকতে চায়।
হুমায়ূন আহমেদের ‘দ্বৈরথ’ বইয়ের একটি চরিত্র তুলে ধরে মাহি বলেন, বইটি পড়ছি। বইটির একটি চরিত্র বলছে, তেলে ও জলে মেশে না। এটি ভুল কথা। তেলে–জলে মেশে ঠিকই, কিন্তু একটু ঝাঁকাঝাঁকি করতে হয়। আমি বেশি ঝাঁকাঝাঁকি পছন্দ করি না। ঝাঁকাঝাঁকি করলে হয়তো কিছুক্ষণের জন্য মিলবে। কিন্তু পরে আবার যেই লাউ সেই কদু হয়ে যাবে। সুতরাং আমাদের দুজনের একসঙ্গে থাকার বিষয়টি এ রকমই ছিল। এর চেয়ে ভালো বর্ণনা করতে পারছি না।