১৫ দিনের মধ্যে ভাড়াটিয়া নিবন্ধন শুরু: ডিএমপি

আগামীকাল থে‌কে রাজধানীর সকল থানায় ভাড়া‌টিয়া নিবন্ধন শুরু কর‌বে পু‌লিশ।

১৫ দিনের মধ্যে ভাড়াটিয়া নিবন্ধন শুরু: ডিএমপি

রাজধানীর সকল থানায় আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ভাড়া‌টিয়া নিবন্ধন শুরু কর‌বে পু‌লিশ।

সকা‌লে রাজধানীর ডিএমপি মি‌ডিয়া সেন্টা‌রে এক সংবাদ স‌ম্মেল‌নে এ তথ‌্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা  বিাগের অতি‌রিক্ত পু‌লিশ ক‌মিশনার হা‌ফিজ আকতার।

এসময় তি‌নি বলেন, অপরাধ দম‌নে পু‌লি‌শের বি‌ভিন্ন কৌশ‌লের অংশ হি‌সে‌বে আবা‌রো ভাড়া‌টিয়া হালনাহাদ শুরু হ‌চ্ছে। এজন‌্য প্রয়োজনীয় ব‌্যবস্থা নি‌তে ৫০ টি থানায় নি‌র্দেশনা দেয়া হ‌য়ে‌ছে।

রাজধানীর বি‌ভিন্ন স্থান থে‌কে অপহরণ চ‌ক্রের ৯ সদস‌্যকে আটক ক‌রে গো‌য়েন্দা পু‌লিশ।  এই অপহরণ চক্ররে টার্গেট ছিল সাধারণ মানুষ বলেও জানান তিনি।  তিনি বলেন, অপহরণ চক্রটি অপহৃত‌দের বি‌ভিন্ন ভাড়া বাসায় আট‌কে রাখ‌তো। একা‌র‌ণে আবা‌রও ভাড়া‌টিয়া নিবন্ধন শুরু কর‌ছে পু‌লিশ।

শনিবার দক্ষিণখানের চেয়ারম্যান পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয় বলেও জানান তিনি।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, সাদেকুল ইসলাম, ইফরান, মোহাম্মদ আলী রিফাত, কুতুব উদ্দিন, মাছুম রানা ও গোলাম রাব্বি।  এ সময় তাদের হেফাজত হতে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলিভর্তি ম্যাগাজিন, একটি ছুরি, অপহৃত একটি মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

এ সময় তিনি বলেন, গত ২৯ নভেম্বর, ২০২০ সোয়া ৯টার সময় আনোয়ারুল ইসলাম (ভিকটিম) উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্বপাশে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন।  অপেক্ষা করাকালে হঠাৎ ৪ থেকে ৫ জন অজ্ঞাতনামা অপহরণকারী চক্রের সদস্য মাইক্রোবাসযোগে ভিকটিমের নিকটে আসে।  চক্রটি সু-কৌশলে ভিকটিমকে গাড়িতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।  পরবর্তী সময়ে অপহরণকারীরা ভিকটিমের স্ত্রী ও বড় ভাইয়ের নিকট হতে বিকাশের মাধ্যমে ৩ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। মুক্তিপণ পাওয়ার পর অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা ভিকটিমকে উত্তরা পূর্ব থানা এলাকার ল্যাব এইড হাসপাতালের সামনে ফেলে চলে যায়।  এ ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা হয়।  মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশ ছায়া তদন্ত শুরু করে।

ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, কিছুদিন আগে ‍উত্তরায় একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণের ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে অপহরণ চক্রটির সন্ধান পায় গোয়েন্দা পুলিশ।  এই চক্রটি রাজধানীতে গত কয়েকদিনে চারজনকে অপহরণ করেছে তার মধ্যে আরোয়ারুল একজন।  প্রাথমিকভাবে ভিকটিমরা কেউই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেনি।  তারা যখন দেখলো গোয়েন্দা পুলিশ অভিযোগ পাওয়া মাত্র একের পর এক অভিযান চালিয়ে অপহরণকারীদের গ্রেফতার করছে, তখন আস্থা পেয়ে অভিযোগ নিয়ে ছুঁটে আসে পুলিশের কাছে।  ইতোমধ্যে চারজন ভিকটিমই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন।

ভিকটিমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ না দেয়ার বিষয়ে তিনি আরো বলেন,  অপহরণকারীরা অপহরণের পর এই চক্রের নারী সদস্যদের দিয়ে ভিকটিমের অশ্লীল ছবি তুলে রাখতো, যাতে ভিকটিম মুখ খুলতে না পারে।  যদি এ বিষয়ে পুলিশ অথবা অন্য কারো কাছে অভিযোগ করে তাহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকটিমের অশ্লীল ছবি ছেড়ে দেয়ার ভয় দেখাতো।  সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়ার ভয়ে তারা চুপ থাকতো।  এছাড়াও, অস্ত্রের মুখে ভিকটিমদের জিম্মি করে রাখা হতো।  যার ফলে তারা ভয়ে মুখ খুলতো না।

এমন ঘটনার সম্মুখীন হলে, ভয় পেয়ে বা অন্য কোন কারণে চুপ না থেকে বিষয়টি প্রকাশ্যে অথবা গোপনে পুলিশকে অবহিত করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান পুলিশের এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ডিএমপির উত্তরা পশ্চিম, উত্তরা পূর্ব ও বিমান বন্দর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।