‘বঙ্গবন্ধু’ বায়োপিক, মুক্তি মুজিব শতবর্ষেই!
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় পরিচালক ‘শ্যাম বেনেগাল’ তৈরি করছেন ‘বঙ্গবন্ধু’ বায়োপিক। বছরের শেষ সময়েই মুক্তি পেতে পারে বহুল আলোচিত এই বায়োপিক।
২০২১ সাল বাংলাদেশের জন্য নানা কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। কারন চলতি বছরই স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উৎযাপিত হবে। আবার চলতি বছরেই বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রতিক স্বপ্নের পদ্মা সেতুও উদ্বোধন হওয়ার কথা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হয়তবা ওপারে বসে বসেই দেখছেন তার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ যেন সত্যিকারের রুপ পাচ্ছে।
তাইতো বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় পরিচালক ‘শ্যাম বেনেগাল’ তৈরি করছেন ‘বঙ্গবন্ধু’ বায়োপিক। বছরের শেষ সময়েই মুক্তি পেতে পারে বহুল আলোচিত এই বায়োপিক।
স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীর এই বছরকে ঘিরে সরকারের নানাবিধ পরিকল্পনাও রয়েছে। স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উৎযাপনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বহু দেশের আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা যোগ দেওয়ার আগ্রহও প্রকাশ করেছেন ইতিমধ্যে। এমন সময় যদি বঙ্গবন্ধু বায়োপিক মুক্তি পায় তাহলে এটা যেন সবার মাঝে জীবন্ত বঙ্গবন্ধু ফিরে আসার মতই ঘটনা হবে।
‘বঙ্গবন্ধু’ বায়োপিকটি নিয়ে ইতিমধ্যে দুই দেশেই তৈরি হয়েছে ভীষন আগ্রহ। সেই আগ্রহ আরো যেন বেশি বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানার মধ্যে। তাইতো ছবির জন্য বাছাইকৃত মূল অভিনয় শিল্পিদের ডেকে গণভবনে শোনালেন তাদের বাবা মায়ের জীবনের নানা গল্প। উদ্দেশ্যে তারা যেন ঠিকঠাক তাদের বাবা-মাকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে পারেন। কারন জাতির পিতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে তাদের থেকে আর কেউ ভালো জানে না।
চলচ্চিত্রটিতে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করবেন আরিফিন শুভ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোটবেলার চরিত্রে নুসরাত ফারিয়া ও বড় বেলার চরিত্রে জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। এ ছাড়া তাজউদ্দীন আহমদের চরিত্রে ফেরদৌস আহমেদ এবং বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের স্বামীর পাশে রাজনৈতিক জীবনের সহযাত্রী চরিত্রে অভিনয় করবেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘বঙ্গবন্ধু’-তে তার স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের ডাক নাম রেনুর চরিত্রে অভিনয় করবেন দীঘি।
অন্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলোর মধ্যে বঙ্গবন্ধুর বাবা লুৎফর রহমান এর চরিত্রে খায়রুল আলম সবুজ , বঙ্গবন্ধুর মা সাহেরা খাতুনের চরিত্রে দিলারা জামান, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহচর সৈয়দ নজরুল ইসলামের চরিত্রে সায়েম সামাদকে দেখা যাবে বায়োপিকে। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের অন্যতম নেতা এ কে ফজলুল হকের চরিত্রে অভিনয় করবেন শহীদুল আলম সাচ্চু, মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর চরিত্রে রাইসুল ইসলাম আসাদ, বর্তমান বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক কর্মী আবদুল হামিদের চরিত্রে অভিনয় করবেন গাজী রাকায়েত। এছাড়া হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী চরিত্রে থাকছেন তৌকীর আহমেদ। সিয়াম আহমেদ অভিনয় করবেন শওকত মিয়া চরিত্রে ও মিশা সওদাগর থাকছেন জেনারেল আইয়ুব খানের চরিত্রে।
চলতি জানুয়ারিতে ভারতের একটি কর্মশালা শেষে ২৫ জানুয়ারি থেকে বায়োপিকের স্যুটিং শুরুর কথা শোনা যাচ্ছে। যদিও করোনার কারনে কোনো কিছুই এখন আর নিশ্চিত না। কারন এই স্যুটিং ভার্চুয়ালি করার কোনো সুযোগ নেই। যদিও শুরুতে বাংলাদেশ পার্টের স্যুটিং হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনা মহামারির কারনে সেই সময় স্যুটিং স্থগিত করা হয়। একই কারনে ভারত-পার্টের স্যুটিং আগে করতে চাচ্ছেন শ্যাম বেনেগাল।
সবকিছু ঠিক থাকলে ভারতের স্যুটিং চলবে টানা আড়াই মাস। এরপর কিছুদিন বিরতি থাকবে স্যুটিংয়ে। দ্বিতীয় পর্বের স্যুটিং হবে বাংলাদেশের গাজীপুরে।
বঙ্গবন্ধুর এই বায়োপিক নির্মাণ সার্বক্ষনিকভাবে মনিটরে থাকবে বাংলাদেশের পক্ষে তথ্য মন্ত্রনালয়। আগেই ভারত-বাংলাদেশের ১৯ সদস্যের বোর্ড গঠিত হয়েছে বায়োপিকের কলাকুশলীদের নির্ণয় করতে।
বঙ্গবন্ধুর এই ফিরে আসা যেন বাংলাদেশের জন্য নতুন বারতা নিয়েই আসছে। হয়তবা ততদিন করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে চলে আসবে। স্বাধীনতার সুর্বণ জয়ন্তী উপলক্ষে নতুনরুপে সাজবে বাংলাদেশ। বাস্তবে না হলেও সিনেমার পর্দায় থেকে বঙ্গবন্ধু যেন সবকিছুই নিজ চোখেই দেখবেন। কারন এই স্বাধীনতার জন্যই যে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।