মোদি বিএনপি বৈঠক হচ্ছে না
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকায় অবস্থানরত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে বিএনপির কোন সাক্ষাত হচ্ছে না বলে দলটির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকায় অবস্থানরত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে বিএনপির কোন সাক্ষাত হচ্ছে না বলে দলটির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
মোদির ঢাকায় সফর উপলক্ষে বিএনপি ও বিরোধী দলগুলোর যে সাক্ষাতের খবর চাউড় হয়েছিল সে জলে ভাটা পড়েছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, তাঁরা দলগতভাবে নিজেরা আগ্রহী হয়ে মোদির কাছে সময় চাননি। তাই সাক্ষাতও হয়নি।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ জানান, ‘আমাদের সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেখা করার কথা ছিল এম কোন খবর আমি জানি না। আমাদের সাথে আদৌ কোন যোগাযোগ হয়নি। আমাদের সাথে তার দেখা করার কথা এমন কথা কে ছড়িয়েছে এ বিষয়ে আমার কোন ধারণা নেই।’
তিনি আরও বলেন,‘যারা বাইরে থেকে আসেন তাদের পক্ষ থেকেই যোগাযোগটা হয়। সে হিসেবে তারা আমাদের সাথে কোন যোগাযোগ করেনি কিংবা কোন কর্মসূচিও ছিলো না।’
এদিকে সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিএনপির সাক্ষাৎ না হওয়ায় নানা আলোচনা ছড়িয়েছে রাজনীতিতে। বলা হচ্ছে, সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি সাক্ষাতের সুযোগ পেলেও বিএনপির না পাওয়ার ঘটনা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ রাজপথের বিরোধী দল বলে পরিচিত বিএনপি এ দেশের রাজনীতিতে এখনো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, বিএনপির সাথে মোদির সাক্ষাতের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেছেন যেহেতু ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে দলটির সাক্ষাতের কোন সিডিউল নেই তাই কোন দেখা হচ্ছে না।
তবে বিএনপির ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির প্রভাবশালী একজন সদস্য বলেন, সফরত ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের জন্য বিএনপি কোন আগ্রহই দেখায়নি। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী মোদির সফরসূচিতে বিএনপির সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ রাখা হয়নি। তাই এর বাইরে গিয়ে দেখা করাটা আমরা যুক্তিযুক্ত মনে করিনি।
প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচনা বেশ পুরোনো। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে দেশটির সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের সব চেষ্টা সত্ত্বেও সম্পর্কের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন। তাঁদের মতে, শেখ হাসিনার সরকারকে অসন্তুষ্ট করে ভারতীয় কূটনীতিকরা এখনি বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক স্পষ্ট করতে রাজি হচ্ছে না।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এখন বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন। কিন্তু এবারে বিএনপির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা উল্লেখ নেই মোদির সফরসূচিতে। অন্যদিকে সূচিতে না থাকা সত্ত্বেও গতকাল দুপুরে সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেয়েছে।
ফলে বিএনপির সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। বলা হচ্ছে, বিএনপি ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের এখনও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।
২০০১ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়ার পর চারদলীয় জোট সরকারের সময় থেকেই ভারতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয়। পর্যবেক্ষকদের মতে, অনেক চেষ্টা ও তৎপরতা সত্ত্বেও ওই সম্পর্কে আজ পর্যন্ত জোড়া লাগেনি। যদিও ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার ভারত সফরের মধ্য দিয়ে ওই সম্পর্কে কিছুটা বরফ গলতে শুরু করে। কিন্তু তার মাত্র ছয় মাসের মাথায় ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় বাংলাদেশ সফরে এলে তাঁর সঙ্গে নির্ধারিত বৈঠক বাতিল করেন খালেদা জিয়া। সেদিন জামায়াতের ডাকে হরতাল চলছিল। অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, ওই বৈঠক বাতিল হওয়ায় রাষ্ট্র হিসেবে ভারত ক্ষুব্ধ হয়। কারণ ভারতের শীর্ষ নেতৃত্বের ওপর বিএনপি আস্থা রাখেনি।
প্রকৌশল নিউজ/শা