সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলগুলোর প্রয়োজনীয় স্থানে জেটি স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী : মন্ত্রিপরিষদ সচিব

সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলগুলোর প্রয়োজনীয় স্থানে জেটি স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী : মন্ত্রিপরিষদ সচিব

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমুদ্র তীরবর্তী এলাকাসমুহে প্রয়োজনীয় সমীক্ষা করে জেটি বা টার্মিনাল তৈরির কাজ দ্রুত শুরু করার নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, দেশের সমুদ্রতীরে ডেক বা জেটি নেই। আর এই জেটি বা টার্মিনালেই জাহাজ থাকে এবং লোকজন জাহাজে ওঠা-নামা করে। প্রধানমন্ত্রী দ্রুত সমীক্ষা করে অবিলম্বে জেটি নিমার্ণ কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে।

মাহবুব হোসেন আজ সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।

মাহবুব হোসেন আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে সদ্য আবিষ্কৃত তেল-গ্যাস খনির তেল-গ্যাস ভাল ভাবে ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সমীক্ষা করে সার কারখানা স্থাপন করারও নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘দেশে তেল-গ্যাস পাওয়া গেছে। যে তেল-গ্যাস পাওয়া গেছে তা যেন ভালভাবে ব্যবহার করা যায়। সেজন্য প্রয়োজনীয় সমীক্ষা করে সার কারখানা স্থাপন করার নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি (প্রধানমন্ত্রী)।

মাহবুব হোসেন বলেন, বাংলাদেশ থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোতে বিমান চলাচলে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হচ্ছে। এজন্য বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বিমান চলাচল চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমরা বিমান চলাচলের জন্য চুক্তি করে থাকি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের বিমান চলাচল চুক্তি আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে প্রস্তাব করা হয়েছিল, তারা চুক্তি করতে চায়।

তিনি বলেন, প্রথম যখন প্রস্তাব এসেছিল তখন ইইউতে ব্রিটেনও ছিল। পরবর্তীতে এটি যখন চূড়ান্ত হয়ে যায় ততক্ষণে ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যায়। এখন যারা ইউরোপীয় ইউনিয়নে রয়েছেন পরে তারা প্রস্তাব দেয়। তাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এখন তাদের সঙ্গে চুক্তি হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ চুক্তির বৈশিষ্ট্য হলো এই যে এখন যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনো দেশের সঙ্গে আমরা বিমান চলাচল চুক্তি করি। তবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে স্টান্ডার্ড (মান) সেটি মেইনটেইন করতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে স্ট্যান্ডার্ড বা টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন আছে, যে লাইসেন্সিং শর্তগুলো আছে, সেগুলো মেনটেইন করতে হবে। খসড়া চুক্তিতে এটিই বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান যে চুক্তিগুলো আছে, সেগুলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের বর্তমান চুক্তির আলোকে বাস্তবায়ন করব সেটাই এখানে বলা হয়েছে মূলত।’
মাহবুব হোসেন বলেন, সভায় ‘জাতীয় স্বেচ্ছাসেবা নীতিমালা, ২০২৩’র খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, স্বেচ্ছাসেবা দেশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। দেশের যে কোন ধরণের দুর্যোগ মোকাবেলায় স্বেচ্ছাসেবীরা দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা পালন করে থাকে। তাদের কাজকে সহজ ও স্বেচ্ছাসেবাকে উৎসাহিত করতে এই নীতিমালা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এই নীতিমালা অনুযায়ী স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, ছবিসহ তাদের কার্ড থাকবে, শারিরীকভাবে তাদের সুরক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে এবং আইনগত ভাবেও তাদের সহযোগিতা করা হবে।

মাহবুব হোসেন বলেন, সারা পৃথিবীতে ভলানটিয়ারদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তারা যাতে বিদেশেও স্বেচ্ছাসেবা দিতে পারে, সে ব্যবস্থাও থাকবে। এছাড়াও বিএনসিসি, রোভার স্কাউটসহ অন্য সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীদের কাজেরও স্বীকৃতি দেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কাউন্সিল গঠন করা হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দেশের পর্যটন ব্যবস্থাকে আরো জনপ্রিয় করে গড়ে তুলতে ‘সামুদ্রিক পর্যটন নীতিমালা, ২০২৩’র খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, পর্যটকদের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া, পর্যটন খাতে বেসরকারী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে ও ট্যুর অপারেটরদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার লক্ষে এই নীতিমালা করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, সমুদ্র পথে কেউ হজ করতে চাইলে তাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করতেও এই নীতিমালা কাজ করবে।

মাহবুব হোসেন আরও বলেন, বাংলাদেশ ও কসোভোর মধ্যে সইয়ের লক্ষ্যে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তির খসড়াও অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো বলেন, জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জে সিআরইসি ইন্টারন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনাজি কোম্পানী লি. (সিআইআরই) চায়না এবং বি-আর পাওয়ারজেন লি. (বিআরপিএল)’র যৌথ উদ্যোগে ‘মাদারগঞ্জ সোলার পাওয়ার কোম্পনী লিমিটেড’ শিরোনামে জয়েন্ট ভেঞ্চার কমিটি (জেভিসি) অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রায় সাড়ে তিনশ’ একর জমির ওপর এই সোলার পাওয়ার কোম্পানী প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। কোম্পানীর ৩০ শতাংশের মালিক থাকবে বিআরপিল এবং ৭০ শতাংশের মালিক থাকবে চীনা কোম্পানী সিআইআরই। ২০ বছর মেয়াদী জেভিসি গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।