সাইবার স্পেসে মুদ্রা পাচারকারী চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার
সাইবার স্পেস ব্যবহার করে মুদ্রা পাচার চক্রের চার সদস্য গ্রেপ্তার করেছে এন্টি টেররিজম ইউনিট। বুধবার পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান এতথ্য নিশ্চিত করেন।
সাইবার স্পেস ব্যবহার করে মুদ্রা পাচার চক্রের চার সদস্য গ্রেপ্তার করেছে এন্টি টেররিজম ইউনিট। বুধবার পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান এতথ্য নিশ্চিত করেন।
নোয়াখালী জেলার সুধারামপুর, ঢাকা জেলার সাভার ও ঢাকা মহানগরীর বনশ্রী এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাইবার স্পেস ব্যবহার করে মুদ্রা পাচার চক্রের চার সদস্য গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত সদস্যরা হলো- জমির উদ্দিন (৩৫), মোঃ কামরুল হোসেন ওরফে রুবেল (৩৯) মনজুরুল ইসলাম হৃদয় (২৬) ও অনামিকা সরকার (২৪)।
গ্রেপ্তারকৃত সদস্যগণ “StreamKar (স্ট্রিমকার)” নামের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে মুদ্রা পাচার করে আসছিল। “StreamKar (স্ট্রিমকার)” অ্যাপে গ্রুপ চ্যাট, লিপ সিং, ড্যান্স, গল্প, কবিতা আবৃত্তিসহ বিভিন্ন ধরনের অনলাইন জুয়া খেলার অপশন রয়েছে। তবে বাংলাদেশে যে কোন জুয়া, অনলাইন প্রতারণা আইনগত ভাবে নিষিদ্ধ।
পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট, বাংলাদেশ পুলিশ দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে এসব প্রতারণা ও ডিজিটাল মুদ্রা পাচার রোধে কাজ করছে। “StreamKar(স্ট্রিমকার)” এর মাধ্যমে বাংলাদেশে যারা সাধারণ মানুষকে প্রতারণা ও ডিজিটাল মাধ্যমে মুদ্রা পাচার করছে গ্রেফতারকৃত সদস্য ও তাদের সহযোগীরা এ ব্যাপারে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ করে আসছিল।
সামাজিক যোগাযোগের “StreamKar (স্ট্রিমকার)” অ্যাপটিতে দুই ধরনের আইডি রয়েছে- ইউজার আইডি এবং হোস্ট আইডি। ইউজারগণ সাধারণত সুন্দরী মেয়েদের ও সেলিব্রেটিদের সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য এই অ্যাপটি ব্যবহার করে। হোস্টগণ একটি হোস্ট এজেন্সির মাধ্যমে এই অ্যাপে হোস্টিং করেন। সুন্দরী মেয়ে এবং সেলিব্রেটিরাই সাধারণত এই এজেন্সির মাধ্যমে হোস্ট আইডি খোলেন। এতে দুই ধরনের এজেন্সি রয়েছে- বিন্স এজেন্সি, হোস্ট এজেন্সি। বিন্স এজেন্সি সমূহ বিদেশী এই অ্যাপটির অ্যাডমিনদের কাছ থেকে বিন্স ক্রয় করে ইউজারদের কাছে বিক্রয় করে। এই অ্যাপের ইউজারেরা এই Beans, Host দের সাথে লাইভ স্ট্রিমিং-এ আড্ডা দেওয়ার জন্য গিফট হিসাবে প্রদান করে। বিন্স এক ধরনের ডিজিটাল কারেন্সি।
এতে দুই ধরনের ডিজিটাল কারেন্সি রয়েছে- বিন্স ও জেমস। প্রতি এক লাখ বিন্সের মূল্য ১ হাজার ৮০ টাকা এবং প্রতি এক লাখ জেমসের মূল্য ৬০০ টাকা বা তার কম। কিন্তু এক বিন্স সমান এক জেমস। ইউজারেরা হোস্টদেরকে গিফট হিসাবে বিন্স প্রদান করেন কিন্তু এই বিন্স হোস্টদের কাছে এলেই তা জেমস এ পরিণত হয়। সঞ্চিত জেমস এর পরিমানের উপরই নির্ভর করে হোস্টদের ইনকাম।
তবে হোস্টদেরকে মাস শেষে বেতন পাওয়ার জন্য শুধু সঞ্চিত জেমসই যথেষ্ঠ নয়। তাকে প্রতি দিন এবং প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লাইভ স্ট্রিমিং এ থাকতে হয়। এই বিন্স এবং জেমস এই দুইটি ডিজিটাল কারেন্সিই স্ট্রিমকারের চালিকা শক্তি। দেশীয় বিন্স এজেন্সি সমূহ সাব-এজেন্সি নিয়োগসহ কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দরী মেয়েদের বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন ভাবে লোভনীয় অফার দিয়ে লাইভ স্ট্রিমিংয়ে এনে ইউজারদের সাথে প্রতারণাও করে থাকে।
বাংলাদেশে যারা বিন্স এজেন্সি পরিচালনা করে তারা হুন্ডি, Hawala, Crypto Currency উরি ব্যাংকের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। প্রতারকচক্রের গ্রেফতারকৃত চার সদস্য ও তাদের পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে সাভার থানায় ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২০১৮ এর ২৪(২)/২৬(২)/৩০(২) ধারায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।
প্রকৌশল নিউজ/এমআরএস