একনেকে ২৬৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯ প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম সংশোধনীসহ ৯টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা ২১ লাখ টাকা।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম সংশোধনীসহ ৯টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা ২১ লাখ টাকা।
বুধবার (০১ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে চীন ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ৯ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। সুদ-আসলে এই ঋণ ডলারে পরিশোধ করতে হবে। ফলে ভৌত অবকাঠামোগত কাজ শুরুর আগেই নতুন করে ৬৫১ কোটি ৭১ লাখ ১৮ হাজার টাকা ব্যয় বাড়ছে এ প্রকল্পে। ২০১৭ সালে যখন প্রকল্পটি পাস হয় তখন ডলারের দাম ছিল ৮০ দশমিক ৭০ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৮৯ টাকা। ব্যয়ের পাশাপাশি প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ছে দুই বছর।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, মূল প্রকল্পের ব্যয় ছিল ১৬ হাজার ৯০১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। নতুন করে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে ১৭ হাজার ৫৫৩ কোটি ৪ লাখ টাকা। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুনে সম্পন্ন হওয়ার কথা। নতুন করে মেয়াদ দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করার প্রস্তাব করা হচ্ছে। প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ এখনও শেষ হয়নি।
২০১৭ সালে রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকার যানজট নিরসনে ১৬ হাজার ৯০১ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটি ২০২২ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে চীনের ঋণ পেতে দেরি হওয়ায় প্রকল্পটির কাজ শুরু হতে দেরি হয়। মূল প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ধরা হয়েছিল ৫ হাজার ৯৫১ কোটি ৪১ লাখ টাকা এবং চীনা ঋণ ধরা ছিল ১০ হাজার ৯৪৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
সংশোধিত প্রস্তাবে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ১৭ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৯০৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বেড়ে ৭ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা হচ্ছে। অন্যদিকে চীনা ঋণ ১ হাজার ২৫৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা কমে হচ্ছে ৯ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা।
একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে দেশের ভেতরের-বাইরের অনেক চাপ ছিল। জনগণ ও তাদের আশীর্বাদ ছিল বলেই পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন করতে পেরেছি।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে জানান।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়ে গেল। সেতু বাস্তবায়নে নানা স্ট্রাগল ও চাপের বিষয়ে একনেক সভায় খোলামেলা আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। জনগণ পাশে ছিল ও তাদের আশীর্বাদ ছিল বলেই পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হয়েছে। দেশের ভেতরের-বাইরের অনেক প্রতিকূলতা ছিল বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এসব বিষয় আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেছেন।
এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রায় দুই বছর পর একনেকে সশরীরে আজ উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সভায় উপস্থিত হয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। অনেক গল্প করেছেন। বিস্তারিত অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এখন থেকে প্রধানমন্ত্রী সশরীরে উপস্থিত হয়েই একনেক সভায় সভাপতিত্ব করবেন।