‘আমি ব্যবসায়িক ষড়যন্ত্রের শিকার’ দাবি এরশাদ গ্রুপের চেয়ারম্যানের
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘রিকশা চালক থেকে কোটিপত’এবং ‘ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডারের মাধ্যমে এবি ব্যাংকের ১১৪ কোটি টাকা লোপাট’ শিরোনামে সংবাদ প্রচারের বিষয়ে এরশাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. এরশাদ আলী দাবি করেছেন, তিনি তার ব্যবসায়ীক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার। তিনি জানিয়েছেন, এবি ব্যাংকের ডিএমডি আব্দুর রহমানকে দিয়ে তার ব্যবসায়ীক প্রতিপক্ষরা তার বিরুদ্ধে এই ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক কাজ করছে।
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘রিকশা চালক থেকে কোটিপতি’এবং ‘ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডারের মাধ্যমে এবি ব্যাংকের ১১৪ কোটি টাকা লোপাট’ শিরোনামে সংবাদ প্রচারের বিষয়ে এরশাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. এরশাদ আলী দাবি করেছেন, তিনি তার ব্যবসায়ীক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের শিকার। তিনি জানিয়েছেন, এবি ব্যাংকের ডিএমডি আব্দুর রহমানকে দিয়ে তার ব্যবসায়ীক প্রতিপক্ষরা তার বিরুদ্ধে এই ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক কাজ করছে।
শনিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন এরশাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. এরশাদ আলী। সেখানে তিনি এসব কথা জানান।
এরশাদ আলী বলেন, আজকে এরশাদ গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীক প্রতিপক্ষের যে ষড়যন্ত্র, যে দুর্নীতি ও কারচুপি চলছে সেটাই তুলে ধরার জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। প্রত্যেকটা কথার ডকুমেন্টস আছে আমার কাছে।
তিনি বলেন, আমি একজন রিকশা চালক কথাটা কতখানি গ্রহনযোগ্য বা আসলে আমি রিকশা চালক কিনা বা রিকশা চালিয়েছি কিনা সেই বিষয়ে কথা বলবো। রিকশা চালকের কাছে কয়েকটা ব্যাংকের শতশত কোটি টাকা লুটপাট, আত্মসাৎ এ নিয়ে আমরা প্রায়ই দেখি একের পর এক পত্রিকাতে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। তা সাথে সাথে আমরা প্রতিবাদ করে আসছি।
নিজের ব্যবসায়িক পরিচয় দিতে গিয়ে এরশাদ আলী বলেন, আমি একটি ব্যবসায়িক পরিবারে জন্মগ্রহণ করি। আমার বাবা, দাদা এবং দাদার দাদারাও ব্যবসা করতেন। সেই বংশের সুত্র ধরে আজ আমার পরিচয় এই এরশাদ গ্রুপ। আমি হাজারো লোকের কর্মসংস্থান তৈরী করছি। এই কর্মসংস্থান তৈরী করতে গিয়ে আমি ব্যবসাকে বড় করছি।
ছাত্র জীবনে রাজশাহীতে এক পর্যায়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি আমি ব্যবসা শুরু করি। সে সময় আমি রিকশার ব্যবসা চালু করি। এক পর্যায়ে আমার এই ব্যবসায় অনেক বিশাল আকার ধারণ করে। সে সময়ই আমার বিয়ের প্রস্তাব আসে একটি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়িক পরিবারের কাছ থেকে। পরে তাদের পরামর্শেই আমি এই রিকশার ব্যবসাটা ছেড়ে দেই।
তিনি বলেন, তারপর আমি রড় সিমেন্টের ব্যবসা শুরু করি। সে সময় বাংলাদেশে কোন সিমেন্ট উৎপাদন হতো না। তখন বিদেশ থেকে আনা সিমেন্ট আমি বিক্রি করি। আমার তিন ভাই সে সময় বিদেশে ছিলো। তারাও আমাকে ব্যবসার জন্য আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতো। সে সময় ব্যবসায় ভালো সার্ভিস দেওয়ার জন্য আমি একটা ট্রাকের ব্যবস্থা করি। একটা সময় শত ট্রাকের ব্যবস্থা করে ফেলি। যেহেতু আমার রড-সিমেন্টের ব্যবসা, তাই এই ট্রাকগুলো আমার খুব কাজে লাগলো। এভাবে ব্যবসা করতে করতে রাজশাহীসহ প্রায় ১৬-১৭ জেলায় আমার ব্যবসায়িক সুনাম ছড়াতে থাকে। সে সময় আমার ভাইয়েরা বিদেশ থেকে আসলে তাদেরও এই ব্যবসায় সম্পৃত্ত করাই। এভাবেই ধীরে ধীরে এরশাদ ব্রাদার্স থেকে এরশাদ গ্রুপের তৈরী হয়।
এরশাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. এরশাদ আলী বলেন, আজ এই যে কথা উঠেছে, এরশাদ রিকশা চালিয়েছে। আমি কখন রিকশা চালিয়েছি, যখন দেখেছি আমার পাঁচটা রিকশা অলস পরে আছে। রিকশা চালকেরা ছুটিতে গেছে। তখন আমি আমার ভাইদের নিয়ে রাজশাহী শহরে রিকশা চালিয়েছি। যেন আমার ব্যবসায় ক্ষতি না হয়, তা যেন লাভে থাকে। শুধু তাই নয়, যখন আমি রড সিমেন্টের ব্যবসা করতাম তখন অনেক সময় ট্রাকের ভেতরের রড-সিমেন্ট দ্রুত নামানোর জন্যও আমি আমার ভাইদের নিয়ে সেই কাজও করেছি। এভাবে পরিশ্রম করে আমি আমার ব্যবসা দাড় করিয়েছি।
তিনি তার বিরুদ্ধে প্রকাশিত ও প্রচারিত সংবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সম্প্রতি কিছু ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে ‘রিকশা চালক থেকে কোটিপত’ এবং ‘ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডারের মাধ্যমে এবি ব্যাংকের ১১৪ কোটি টাকা লোপাট’ শিরোনামে যে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এবি ব্যাংক থেকে এরশাদ গ্রুপের নামে ২০১৫-২০১৭ এই দুই বছরে চিনোহাইড্রো ও মেজর ব্রীজ প্রকল্পের ৬টি ভূয়া ওয়ার্ক অর্ডার দেখিয়ে ১১৪ কোটি টাকা লোন উত্তোলন বিষয়ে প্রচারিত সংবাদ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
তার বিরুদ্ধে প্রচারিত ও প্রকাশিত সংবাদগুলো এবি ব্যাংকের ডিএমডি আব্দুর রহমানকে দিয়ে তার ব্যবসায়ীক প্রতিপক্ষরা তার বিরুদ্ধে এই ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক কাজ করছে বলেও দাবি করেন এরশাদ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. এরশাদ আলী।
তিনি বলেন, এবি ব্যাংকের ডিএমডি আব্দুর রহমান সিটি ব্যাংকে কর্মরত থাকাকালীন অবস্থায় তার গুলশানের প্রায় ৭ কোটি টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট আমার কাছে বিক্রি করলেও দীর্ঘদিন ধরেই তিনি তা নিজেই দখল করে আসছেন। আমি আমার কেনা ফ্ল্যাটটির দখল বুঝে পেতে তার বিরুদ্ধে মামলা করলে তিনি আমি ও আমার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এধরনের ষড়যন্ত্রমূলক কাজে লিপ্ত হন।
প্রকৌশল নিউজ/ এম আর