মুখ বাঁকা রোগে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা
ফেসিয়াল পালসি বা বেলস পালসি আমাদের মুখের এক ধরনের প্যারালাইসিস। আমাদের ব্রেনের ১২ জোড়া ক্রেনিয়াল নার্ভের মধ্যকার ৭নং ক্রেনিয়াল নার্ভটিকে ফেসিয়াল নার্ভ বলে। যখন এটি আংশিক বা সম্পূর্ণ প্যারালাইজড হয়ে যায় তখন তাকে ফেসিয়াল পালসি বলা হয়।
* ফেসিয়াল পালসি বা বেলস পালসি কী?
ফেসিয়াল পালসি বা বেলস পালসি আমাদের মুখের এক ধরনের প্যারালাইসিস। আমাদের ব্রেনের ১২ জোড়া ক্রেনিয়াল নার্ভের মধ্যকার ৭নং ক্রেনিয়াল নার্ভটিকে ফেসিয়াল নার্ভ বলে। যখন এটি আংশিক বা সম্পূর্ণ প্যারালাইজড হয়ে যায় তখন তাকে ফেসিয়াল পালসি বলা হয়।
ব্রেইন স্ট্রোক বা আঘাত বা ট্রমা বা হেড ইনজুরির কারণে ফেসিয়াল নার্ভ প্যারালাইসিস হয়ে ফেসিয়াল পালসি এবং ঠান্ডা জনিত কারণে ফেসিয়াল নার্ভ প্যারালাইসিস হয়ে হয় বেলস পলিসি।
* ফেসিয়াল পালসি বা বেলস পালসি কাদের বেশি হয়?
এটি যে কোনো বয়সের মহিলা ও পুরুষ উভয়েরই হতে পারে, তবে পুরুষের তুলনায় মহিলাদের এই রোগটি বেশি দেখা যায়।
* ফেসিয়াল পালসি বা বেলস পালসি কেন হয়? বেলস পালসি বিভিন্ন কারণে হতে পারে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য-
১। ভাইরাল ইনফেকশন
২। মধ্য কর্ণের ইনফেকশন
৩। ঠাণ্ডা জনিত কারণ
৪। আঘাত জনিত কারণ
৫। মস্তিষ্কের স্ট্রোকজনিত কারণ
৬। ফেসিয়াল টিউমার
৭। কানের অপারেশন পরবর্তী ফেসিয়াল নার্ভ ইনজুরি ইত্যাদি।
* ফেসিয়াল পালসি বা বেলস পালসি হলে রোগীর কী কী লক্ষণ দেখা যায়?
১। আক্রান্ত রোগীর মুখ একদিকে বাঁকা হয়ে যায়
২। আক্রান্ত পাশের চোখ বন্ধ হয় না
৩। আক্রান্ত পাশের চোখ দিয়ে পানি পড়ে
৩। কুলি করতে গেলে মুখ অন্য পাশে চলে যায়
৪। খাবার গিলতে কষ্ট হয়
৫। কপাল ভাঁজ করতে পারে না
৬। অনেক সময় কথা বলতে কষ্ট হয়।
৭। পানি পান করতে কষ্ট হয়।
৮। নাক কুচকাতে কষ্ট হয়
৯। ফু দিতে পারে না।
১০। মুখ ভেংচি দিতে পারে না।
১১। মুখের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।
* ফেসিয়াল পালসি বা বেলস পালসি নির্ণয় করবেন কীভাবে?
এটি একজন ফিজিওথেরাপি কনসালটেন্ট ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ও রোগীর ইতিহাস জেনে রোগ নির্ণয় করতে পারেন, তবে অনেক সময় কিছু প্যাথলজিক্যাল ও রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষা করার প্রয়োজন পড়ে। যেমন-
১। কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট উইথ ইএসআর
২। এক্স-রে অব টিএম (টেম্পরো-মেন্ডিবুলার) জয়েন্ট
৩। সি টি স্ক্যান অব দ্যা ব্রেইন
৪। নার্ভ কন্ডাকশন ভেলসিটি (এনসিভি) অব ফেসিয়াল নার্ভ ইত্যাদি।
* ফেসিয়াল পালসি বা বেলস পালসি রোগের চিকিৎসা কী?
এই রোগের চিকিৎসা কারণের ওপর নির্ভর করে। ওষুধ কারণ অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন, তবে সবক্ষেত্রেই ওষুধের পাশাপাশি মূল চিকিৎসা হলো ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা। এই রোগে একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি কনসালটেন্ট রোগীর অবস্থা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান করে থাকে তার মধ্যে-
# মেডিসিন থেরাপিঃ
# এস এ আই ডি ড্রাগ
# এ্যান্টি আলসারেন্ট ড্রাগ
# নিউরো ভিটামিন ড্রাগ
# আই ড্রপ
# এ্যান্টি ভাইরাল ড্রাগ
# মাসেল রিলাক্সজেন্ট ড্রাগ
# মেকানিকাল থেরাপিঃ
# আই আর আর
# প্যারাফিন ওয়াক্স থেরাপি
# আলট্রা সাউন্ড থেরাপি
# ইলেকট্রিকাল স্টিমুলেশন
# ম্যানুয়াল থেরাপিঃ
# প্রোপ্রিওসেপটিভ নিউরো মাস্কুলার ফ্যাসিলিটেশন
# স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ অব দ্য ফেসিয়াল মাসেলস
# হোল্ড রিলাক্স এক্সারসাইজ অব দ্য ফেসিয়াল মাসেলস
# অ্যাক্টিভ ও প্যাসিভ এক্সারসাইজ অব দ্য ফেসিয়াল মাসেলস
# স্ট্রেন্থদেনিং এক্সারসাইজ অব দ্য ফেসিয়াল মাসেলস
# ফাংশনাল রি-এডুকেশন এক্সারসাইজ অব দ্য ফেসিয়াল মাসেলস
# স্পিচ রি-এডুকেশন থেরাপি
# ব্যালুনিং এক্সারসাইজ
# রিঙ্কলিং এক্সারসাইজ ইত্যাদি।
# মেনশনেড এ্যাসিসটিভ ডিভাইছঃ
# আই প্যাড ঘুমানোর সময় চোখে দিতে হবে
# চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে রোগীর কিছু নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে।
যেমনঃ
১। ঠাণ্ডা আবহাওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে
২। আইসক্রিম ও ফ্রিজের ঠাণ্ডা খাবার খাওয়া যাবে না
৩। বাইরে বা রোদ্রে গেলে চোখে সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে যেন আক্রান্ত চোখে ধুলাবালি ঢুকতে না পারে।
৪। রাতে ঘুমানোর সময় আক্রান্ত চোখের ওপর রুমাল বা নরম কাপড় দিয়ে রাখতে হবে যাতে কোনোকিছু চোখের মধ্যে না পড়ে।
৫। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করতে হবে।
লেখকঃ
প্রফেসর ডাঃ মোঃ আবু সালেহ আলমগীর
বি পি টি, এম ডি, এম পি এইচ, এম ডি এম আর, পি এইচ ডি
প্রফেসর এন্ড চেয়ারম্যান
ডিপার্টমেন্ট অব ডিজএ্যাবিলিটি এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন
দ্যি ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লা, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০
চেম্বারঃ বাংলাদেশ পেইন, ফিজিওথেরাপি এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার
২৬০/৬ ঢাকা বিজ্ঞান কলেজ বিল্ডিং এর ৫ম তলা বা লিফ্ট এর ৪
কনসালটেন্ট ও বিভাগীয় প্রধান
ফিজিওথেরাপি মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন ডিপার্টমেন্ট
আমেরিকা বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল, মালিবাগ মোড়, ঢাকা
এ্যাপয়েন্টমেন্টঃ ০১৬৪১৫৭৬৭৮৭, ০১৭৩৮৩৯৪৩০৯